আপডেট : ১৯ December ২০১৮
ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘ফেথাই’-এর প্রভাবে বাংলাদেশে গত রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া ঝিরিঝিরি বৃষ্টি আজ বুধবারও অব্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ এলাকার রাস্তা কাদায় ভরে উঠেছে। শীতও অনুভূত হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার আকাশ মেঘমুক্ত হবে এবং এরপর থেকে শীত বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফেথাইয়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানান আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান। তিনি আরো জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। আবহাওয়ার মঙ্গলবারের বুলেটিনে বলা হয়, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরো উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে এটি ভারতের অন্ধ্র (কাকিনাদার কাছে) প্রদেশ অতিক্রম করেছে। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে গিয়ে দুর্বল হয়ে প্রথমে গভীর নিম্নচাপে এবং সর্বশেষে নিম্নচাপ ও পরে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটা পর্যায়ক্রমে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে দুর্বল হবে। এদিকে মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ২৩ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জানান, আজ বুধবারও খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার পর আকাশ মেঘমুক্ত হলে রাতের তাপমাত্রাও কমবে। শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে। সে সময় সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ২-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমাদের দিনাজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিরিঝিরি বৃষ্টির সঙ্গে হিমালয়ের পাদদেশের জেলা দিনাজপুরে কুয়াশাও বেড়েছে। ফলে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার কারণে গত সোমবার দুপুর থেকে দিনাজপুরে সূর্যের দেখা মিলছে না। কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যা নামতে না নামতেই শীতল হাওয়া ও ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল বাতাসে নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। শীতে কাজ করতে অসুবিধা হওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। মঙ্গলবার সকাল থেকে দেখা যায়, মহাসড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাফেরা করছে। দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম জানান, জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৪০ হাজার কম্বল বিতরণের জন্য ১৩টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পাঠিয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে সেগুলো বিতরণ শুরু হবে। এছাড়াও ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কিছু লেপ তৈরি করা হয়েছে। যারা একেবারে অসহায়, তাদের লেপ ও আর্থিক কিছু নগদ অর্থ দিয়ে সহতায়তা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে নিজ নিজ এলাকার পিআইওর সঙ্গে কথা বলে শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানোর জন্য।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১