আপডেট : ০৫ December ২০১৮
রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার মামলায় বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর পরবর্তী সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালতে এ মামলার বাদীর বাকি সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। এর আগে সোমবার প্রথম দিনের মতো মামলার বাদী এসআই রিপন কুমার দাস সাক্ষ্য দেন। তার সাক্ষ্য শেষ না হওয়ায় বিচারক মঙ্গলবার ফের সাক্ষ্যের জন্য দিন ধার্য করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, আসামিদের পক্ষে বাদীকে জেরা করা হয়। বাদী রিপন কুমার দাস তার সাক্ষ্যে বলেন, পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে বেশ কিছু সময় গোলাগুলি হয়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীদের নিক্ষিপ্ত গুলি ও গ্রেনেডের আঘাতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য জখম হন। এরপর আরো পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আর্টিজান রেস্টুরেন্টে অবস্থানকারী সন্ত্রাসীদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তারা অগ্রসর হলে পুলিশকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা অনবরত গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ করতে থাকে। ৩০-৩৫ জন মারাত্মকভাবে জখম হয়। চিকিৎসার জন্য তাদের ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন আহম্মেদ খান ও ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম মারা যান। বাদী বলেন, পরের দিন ২ জুলাই সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জিম্মিদের উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করে। সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হ্যান্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ করলে সেনাবাহিনী পাল্টা আক্রমণ করে। সেখান থেকে ৩২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। জিম্মি থাকা অবস্থায় ২০ জনকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। অভিযানে ছয় সন্ত্রাসী নিহত হয়। জবানবন্দি শেষে বাদী জব্দ করা ২৫ ধরনের আলামত বিচারকের সামনে উপস্থাপন করেন। সেগুলো হলো- হামলায় ব্যবহূত তিনটি মেশিনগান, পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, সাতটি মেশিনগানের ম্যাগজিন, পিস্তলের ছয়টি ম্যাগজিন, পিস্তলের ৩৪ রাউন্ড গুলি, মেশিনগানের ৭৯ রাউন্ড গুলি, ৯টি গ্রেনেডের সেফটি পিন, তিন শতাধিক গুলির খোসা, দুটি চাপাতি, দুটি ছোরা। এদিকে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষে কারাগারে থাকা ছয় জঙ্গিকে হাজির করেছে পুলিশ। তারা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান ও হাদিসুর রহমান সাগর। গত ২৬ নভেম্বর আলোচিত মামলাটির বিচার শুরুর নির্দেশ দেন একই আদালত। গত ২৩ জুলাই ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর গুলশান হামলা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়। পরে অবশ্য হাসনাত করিমকে অব্যাহতি দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েস। এ মামলায় অভিযোগপত্রে ২১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে আটজন আসামি বিভিন্ন অভিযানে ও পাঁচজন হলি আর্টিজানে অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া জীবিত আটজনের মধ্যে ছয়জন কারাগারে এবং বাকি দুজন পলাতক। পলাতক দুই আসামি হলেন শহীদুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন। অভিযানে নিহত পাঁচ জঙ্গি হলেন রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১