বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০১ December ২০১৮

ঢাকায় যে খাতির পাই, সেটা কলকাতায় ভাবা যায় না

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ছবি : সংগৃহীত


শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ— দুই বাংলার পাঠকের কাছে এক যশস্বী কথাসাহিত্যিকের নাম। তার জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায়, ব্রহ্মপুত্র নদের ধারে। ভারতীয় রেলে কর্মরত ছিলেন তার বাবা। ফলে শৈশব-যৌবন কেটেছে নানান ঠাঁইয়ে। মহাবিদ্যালয় স্তরের অধ্যয়ন কলকাতায়, স্নাতকোত্তর করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বৃত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন শিক্ষকতা, পরে সাংবাদিকতা। প্রথম উপন্যাস ‘ঘুণপোকা’ লেখক শীর্ষেন্দুর কীর্তিপথ প্রশস্ত করে দেয়। ১৯৮৯ সালে ‘মানবজমিন’ উপন্যাসের জন্য অর্জন করেন ‘সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার’। ছোটদের জন্য অবিরাম লিখেছেন। শিশুকিশোর সাহিত্যের অনন্য কৃতির প্রতি স্বীকৃতি জ্ঞাপন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে ১৯৮৫ সালে তাকে অর্পণ করা হয় ‘বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার’। এই বরেণ্য কথাসাহিত্যিকের সাড়া জাগানো অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘পার্থিব’, ‘দূরবীন’ ইত্যাদি। অনন্ত মানবজমিন ধরে অবিরাম হেঁটে চলা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের খবরের জন্য প্রশ্নময় কথাবার্তায় সঙ্গী হন পশ্চিমবঙ্গের তরুণ কবি অরুণাভ রাহারায়

অরুনাভ রাহারায় : ‘শিগগিরই আমি সুসময় নিয়ে আসছি পৃথিবীতে... অপেক্ষা করো...।’ এইমতো অপরাজেয় প্রত্যয়ে এসে থেমেছিল আপনার প্রথম উপন্যাস। ঘুণপোকা যখন লিখলেন তখন তো আপনি মানসিক অস্থিরতার মধ্যে ছিলেন। তবুও কী করে লেখা হলো বাংলা সাহিত্যের এই অমোঘ উপন্যাস?
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় : ঘুণপোকা অনেকদিন আগে লেখা। প্রায় ৫০ বছর আগে। এখন এই উপন্যাস সম্পর্কে আর বেশিকিছু স্পষ্ট করে বলতে পারি না। যেহেতু অনেকদিন আগের কথা। তবে হ্যাঁ, তখন আমি মানসিক আস্থিরতার মধ্যে ছিলাম। সেই অস্থিরতা অবশ্য নানান কারণে হয়। আমি খুব টেনশনে ভুগতাম, সারাজীবনই। সেসব কোনোদিনই আমার লেখালেখিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। আর ঘুণপোকা পরিকল্পিত উপন্যাস নয়। যেমনভাবে এসেছিল তেমনভাবেই লিখেছিলাম। আমার সব লেখাই তা-ই, পরিকল্পিতভাবে লেখা নয়। ধরো, প্রথমে একটা লাইন মাথায় এলো সেটা লিখলাম। তারপর আস্তে আস্তে তা এগোতে থাকে। সেভাবেই লেখা হয়েছিল— পার্থিব ও মানবজমিন।

অ. রা. : যে তরুণ ‘ঘুণপোকা’ লিখেছিল তার সঙ্গে কি আপনার দেখা হয়? এখন তাকে আপনি কতটা চিনতে পারেন?
শী. মু. : যে ‘ঘুণপোকা’ লিখেছিল, সত্যিই তো, সে কোথায় গেল। সে হারিয়ে গেল কি-না, কে জানে। তবে হ্যাঁ এটা ঠিক যে, যখন আমি ‘ঘুণপোকা’ লিখেছিলাম তখন অপ্রস্তুত অবস্থায় লিখেছিলাম। ‘ঘুণপোকা’ লেখার সময় আমার জীবনে একটি সঙ্কটময় মুহূর্ত চলছিল। তবে বরাবর আমি যেভাবে লিখি, সেভাবেই লিখেছি এটাও। লেখার সময় আমি একটি লাইন ভাবি, পুরো গল্পটা কখনো ভাবি না। ভাবতে পারি না বলতে পার। লাইন দিয়েই শুরু করি। কখনো যদি একটি লাইন মাথায় চলে আসে এবং সেটা পছন্দের হয় সেখান থেকেই শুরু করি। এবং এরপর এগোতে থাকি। এভাবে এগোতে এগোতে কিছু একটা দাঁড়ায়। এজন্য কখনো কখনো নতুন না পুরাতন, ভালো না মন্দ এ রকম ব্যাপারটা আমি জাজ করতে পারি না। ‘ঘুণপোকা’ ওই একইভাবে লেখা। একটি লাইন ভেবেছিলাম, এরপর ওই লাইনটা ধরে ধরে অন্ধের মতো এগোলাম, একসময় উপন্যাসটা শেষও করে ফেললাম। কী হলো না হলো, কিছুই বুঝতে পারিনি। আর ওই লেখাটা বের হওয়ার পর বেশ একটা সাড়া শব্দও হয়নি এবং লোকে যে পড়েছে সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। ‘ঘুণপোকা’ আসলে জনপ্রিয় হয়েছে প্রকাশের অনেক দিন পর। প্রথম চার-পাঁচ বছর তো ‘ঘুণপোকা’ সম্পর্কে কোনো উচ্চবাচ্যই শুনিনি। এক-আধটা মন্তব্য কানে এসেছে, এ পর্যন্তই। আমার মনে হয় তখনকার পাঠক এটা গ্রহণই করেনি, কিন্তু পরবর্তীকালে মানুষের কাছে গৃহীত হয়েছে এবং এটা আমার সৌভাগ্য। তবে ‘ঘুণপোকা’র যে লোকটা আমি ছিলাম সেটা তো এখন আর নেই। আমি পাল্টে গেছি অনেকটাই এবং সরে এসেছি। চিন্তা-ভাবনাটাও বার বার পাল্টেছে, তবে হ্যাঁ, পাল্টে গেলেও আমার শব্দচয়ন, ভাবনা-চিন্তার যে একটা ধাঁচ, সেটা তো পাল্টায়নি, সেটা এখনো আছে। তবে ‘ঘুণপোকা’ আমি দ্বিতীয়বার আর পড়িনি। ওই যে লেখা হয়েছিল ওই পর্যন্তই। বলতে পার সাহস পাইনি। যে কারণে ‘ঘুণপোকা’ আমার কাছে কিছুটা অচেনা উপন্যাস হয়েই আছে, কারণ উপন্যাসটিতে কী কী লিখেছিলাম, অধিকাংশই আমার মনে নেই।

অ. রা. : শিক্ষকতা দিয়ে আপনার কর্মজীবন শুরু হলেও পরে আপনি বৃত্তি হিসেবে গ্রহণ করেন সাংবাদিকতা। আবার সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ‘একজন সংবাদপত্রের মালিক স্বাধীন হতে পারেন, কিন্তু একজন সাংবাদিক কখনো স্বাধীন নন...।’
শী. মু. : হ্যাঁ, আমি ঠিকই বলেছি। সাংবাদিক তো চাকরি করেন মাত্র। সুতরাং সংবাদপত্রের মালিক যিনি, তিনি স্বাধীন। তিনি পত্রিকার পলিসি তৈরি করবেন। সেই পত্রিকা কী স্ট্যান্ট নেবে পলিটিক্যালি বা সামাজিকভাবে, তা তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। আর সাংবাদিক তো মালিকের বিরুদ্ধে যেতে পারেন না কখনোই। ফলে তিনি যদি কমিউনিস্ট হন আর মালিক দক্ষিণপন্থি, সেখানে সাংবাদিকের সাধ্য নেই বামপন্থি লেখালেখি করার বা বামপন্থি মতামত দেওয়ার! তাকে মালিকের নির্দেশ অনুযায়ী চলতে হয়। কাজেই কোনোভাবেই একজন সাংবাদিক স্বাধীন নন।

অ. রা. : আপনার ‘স্বপ্নের ভিতরে মৃত্যু’ গল্পটিকে একটি মহাকাব্য বলে মনে হয়।
শী. মু. : ‘স্বপ্নের ভিতরে মৃত্যু’ গল্পটা আমি অনেকদিন ধরে লিখেছিলাম। আমার প্রায় পৌনে দু’বছর সময় লেগেছিল ওই একটা গল্প লিখতে। মহাকাব্য-টাব্য কি-না জানি না, তবে এই গল্পটার মধ্যে আমার অনেক ঘাম আছে, আমার অনেক পরিশ্রম আছে। অনেক অধ্যবসায় আছে, অনেক ধৈর্য আছে। তখন থেকেই আমি আমার গদ্য নিয়ে খুব সচেতন ছিলাম। খুব মনোযোগ দিয়ে লিখেছিলাম গল্পটা। দিনের পর দিন লিখতাম, ফেলে দিতাম, কপি করতাম। গল্পটা ‘ঘুণপোকা’রও আগে লেখা। প্রত্যেকটি বাক্যকে আমি মেপে মেপে ব্যবহার করেছি এখানে। প্রত্যেকটি শব্দ সচেতনভাবে চয়ন করা। অনেক উপমা ব্যবহার করেছিলাম। তখন আমি অবশ্য মৃত্যুর দিকটা, হতাশার দিকটা খুব বড় করে দেখতাম। পরবর্তীকালে আমার এই দর্শন পালটে যায়। এর মধ্য দিয়ে আমার গদ্যের ভাষা সংবেদনশীল করতে চেয়েছিলাম। তারই ফসল ‘স্বপ্নের ভিতরে মৃত্যু’।

অ. রা. : বহু তুচ্ছ ঘটনা আপনার গল্পের মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে... ‘ট্যাংকি সাফ’ই ধরুন।
শী. মু. : ‘তুচ্ছ’ ঘটনাকে আমি কখনো তুচ্ছ মনে করি না। তুচ্ছ ঘটনার মধ্যে থেকে আমার কাছে অনেক সত্য উদ্ভাসিত হয়। সামান্য ইভেন্ট থেকেও আমি অনেক কিছু পাই। একটা ময়লা ট্যাংকি পরিষ্কার হচ্ছে— এটা নিয়ে আমার একটা বস্তব অভিজ্ঞতাও হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ‘ট্যাংকি সাফ’ গল্পটা লিখেছিলাম। সেখানে যে অনুষঙ্গ আছে— একটা পরিবার, বাড়িওয়ালার সঙ্গে ঝগড়াঝাটি... তাতে আমি অনেকগুলো চরিত্র আনলাম। আমার একটাই উদ্দেশ্য ছিল, বাইরের ময়লা তো অনেক সময় পরিষ্কার করা যায়, কিন্তু মানুষের ভেতরকার যে ময়লা তা কখনোই পরিষ্কার করা যায় না। মানুষের অন্তরের ময়লা... তার স্বভাবে, ব্যবহারে সেটা সাফ করা যায় না। তা থেকেই যায়। এটা সভ্যতার কাছেই আমার প্রশ্ন! এটা সভ্যতার সঙ্কটও বলতে পার।

অ. রা. : ‘দূরবীন’ উপন্যাসের নায়ক ধ্রুব কাপুরুষ। অথচ তাকে সবাই ভালোবাসে। এমনকি মেয়েরাও...।
শী. মু. : এটা আমার কাছেও একটা ধাঁধা। প্রথম কথা ‘দূরবীন’ উপন্যাসটা কোনো জনপ্রিয় উপন্যাস হওয়ার কথাই নয়। এটাকে বলতে পার দোতলার উপন্যাস। কারণ প্রতি চ্যাপ্টারেই আমি পঞ্চাশ বছর পিছিয়ে গেছি। আবার এগিয়েও এসেছি। প্রথম চ্যাপ্টার শুরু হলো পঞ্চাশ বছর আগে আর দ্বিতীয়তে চলে এলাম আধুনিক যুগে। এভাবে কোনো উপন্যাস লেখা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এই যে দোলাচল, এজন্যই নামটা দিয়েছিলাম ‘দূরবীন’। একপিঠ দিয়ে দেখলে কাছে, অন্যপিঠ দিয়ে দেখলে দূরে। এই উপন্যাসটা যখন লিখছিলাম তখন অনেক দূর লেখার পর বুঝতে পারছিলাম উপন্যাসটি কেউ পড়বে না। আমার মনে হচ্ছিল এই উপন্যাসের মধ্যে প্রচুর আত্মকথন আছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, দুই বাংলাতেই উপন্যাসটার ভালোই পাঠক আছে। আমি দেখি অনেকেই ‘দূরবীনে’র রেফারেন্স দেয়। আমার কাছে খুব বিস্ময়কর লাগে যে, ধ্রুব’র মতো একটি চরিত্রকে যখন পাঠক ভালোবাসে।
কাব্যময়তার চেয়ে মজার দিকটা অনেকটা বেশি। আসলে গদ্যের মধ্যে নানারকম খেলা থাকে। আমি কয়েক রকম গদ্য লিখি বলে আমার ধারণা। আমার ভেতরে একটা মানসজগৎ আছে, সেখানে নানারকম মানুষের বাস, নানারকম চরিত্রের বাস।

অ. রা. : আপনার প্রথম প্রেম?
শী. মু. : প্রশ্নটা বেশ অস্পষ্ট। আমাকে বলতে পার কোন জিনিসটা আমি সব থেকে বেশি ভালোবাসি... তাহলে বলব এই জীবন যাপনটাকেই আমি ভালোবাসি। আর যদি কোনো ব্যক্তির কথা বলতে হয়... তাহলে শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র। আমার জীবনে যা কিছু পরিবর্তন, শুভ পরিবর্তন ঘটেছে তা সবই তার দয়ায় ঘটেছে।

অ. রা. : বন্ধুদের কথা কিছু বলুন কফি হাউজের আড্ডার কথা...।
শী. মু. : বন্ধুদের কথা কী বলব... কফি হাউজে আমার দীর্ঘ আড্ডার জীবন কেটেছে। একটা সময় কফি হাউজটাই ছিল আমাদের বৈঠকখানা। আমি ওই অঞ্চলেই থাকতাম। প্রথমে শ্রীগোপাল মল্লিক লেনে হোস্টেলে থাকতাম, তারপর নবীন চন্দ্র পাল লেনে একটা বোর্ডিং হাউজে থাকতাম। তখন সমস্ত বইপাড়াজুড়েই আমাদের আড্ডা ছিল। পাশেই ছিল নিক্কো বোর্ডিং। সেখানে থাকতেন জোটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। আমার যাতায়াত ছিল। আমার ঘরে শক্তি আসত প্রতিদিনই মাতাল হয়ে। আর কফি হাউজের আড্ডা বলতে সুনীল, শক্তি, সন্দীপন, মতি নন্দী, দেবেশ রায়। নিছক আড্ডাই হতো। কেউ ভালো বই পড়লে সেটা নিয়ে কথা হতো। একবার সমরেশ বসুর ‘বিবর’ নিয়ে খুব হইচই হয়েছিল। একবার সুনীল কী একটা কারণে ভীষণ রেগে গিয়ে শক্তিকে একটা থাপ্পড় মেরে বসল; বা বিনয় মজুমদার কাউকে খিমচে দিল। এসব হামেশাই হতো। বড় বড় লেখককে দেখা যেত। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখা যেত। তিনি ছিলেন আমার মাস্টার মশায়। শক্তি-মীনাক্ষীর প্রেম জমে উঠেছিল কফি হাউজ ঘিরে। এছাড়া অতীন আর সিরাজের সঙ্গে আমার খুব ঘনিষ্ঠতা। সিরাজ প্রায়ই আমার ঘরে আসত, তর্ক করত যে কোনো বিষয়ে। রাত ১২টা বেজে গেলেও আমাদের তর্ক শেষ হতো না। আমি তখন মাস্টারি করতাম আর লেখালেখি করতাম। কালীঘাটের কাছাকাছি একটা স্কুলে পড়াতাম। সেই স্কুলটা এখন উঠে গেছে। তখন কফি হাউজে আড্ডা দিয়ে তারপর স্কুলে যেতাম। ৯টায় কফি হাউজ খুলত। আমি একঘণ্টা আড্ডা মেরে ১৪ নম্বর বাসে উঠে কালীঘাটে চলে যেতাম। ১২টা থেকে ক্লাস থাকত। ওইটুকু সময় আড্ডা না মারলে ভাত হজম হতো না।

অ. রা. : কিছুদিন আগে সমরেশ মজুমদার আপনাকে কচ্ছপের সঙ্গে তুলনা করেছেন। পাশেই বসে ছিলেন আপনি...।
শী. মু. : হ্যাঁ। সমরেশ মজুমদার আমাকে বলেছেন। খরগোশ আর কচ্ছপের রেসের কথা বলেছেন। কিন্তু সাহিত্য তো আর রেসের জায়গা নয়, কে কার সঙ্গে রেস করবে? আমরা সবাই নিজের স্থান থেকে যে যার মতো করে, যা সাধ্য সেটা লিখি, কিন্তু এখানে কারো সাথে কারো কমপিটিশন আছে, সেটা মনে হয় না। আর এরকম কেন থাকবে। সাহিত্য তো কোনো পরীক্ষা নয় যে এখানে আমাকে প্রথম হতে হবে। সাহিত্য একটা সাধনার ব্যাপার, একটা তপস্যার ব্যাপার। এক সাধুর সাথে আরেক সাধুর যেমন কোনো তুলনা নেই, সাহিত্যটাও তা-ই। আমি সুনীলের, সমরেশের পাশাপাশি লিখেছি। তবে সমরেশ কচ্ছপের সাথে তুলনা করে খুব খারাপ করেননি। আমি নিজেকে উইনার বলি না। তবে এটা ঠিক যে আমি একটু ধীরে ধীরে, যেমন ‘ঘুণপোকা’ বের হওয়ার অনেক পরে সাড়া পেয়েছি তেমন ধীরে ধীরে। আমাকে অনেক অপেক্ষা করে থাকতে হয়েছে, অনেক ধীরে ধীরে এগোতে হয়েছে, এটা সত্য। কাজেই কচ্ছপের সাথে তুলনা দিয়ে ভালোই করেছে। তবে উইনার হিসেবে দেখলে আমি দুঃখ পাব, কারণ আমি উইনার নই, বলতে পার সামান্য একটু জায়গায় অবস্থান করার সুযোগ পেয়েছি, এতটুকুই।

অ. রা. : ঢাকা লিট ফেস্টে অংশ নিলেন। কেমন লাগছে?
শী. মু. : ঢাকা আমার নিজের দেশ। অনেকে জানেন আমার দেশ ময়মনসিংহ। সেখানে আমার দাদু থাকতেন। কিন্তু আমার আসল দেশ বিক্রমপুরের বাইনখারা। আমি কোনোদিন আমার পিতৃভূমি দেখিনি। তার জন্য আক্ষেপ হয়। তাছাড়া লেখক হিসেবে ঢাকায় যে খাতির পাই, সেটা কলকাতায় ভাবা যায় না।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১