বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৪ November ২০১৮

ঢাবির প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নিন


সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকায় যেমন মশার উপদ্রব বেড়েছে, তেমনি ডেঙ্গু জ্বরও জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। আর এর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসগুলোতে। খবরে প্রকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। আমরা জানি, অ্যাডিস মশার কামড়ে এ রোগ বাসা বাঁধে মানবশরীরে। জুলাই থেকে অক্টোবর— এই চার মাস ডেঙ্গু মৌসুম হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এ বছর মোট ২ হাজার ২৭১ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শুধু আগস্ট মাসেই ভর্তি হয় ১ হাজার ৫৪ রোগী, যার মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এই রোগ দুটির মৌসুম হিসেবে যাই বলা হোক না কেন, মূলত আমাদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সাধারণ মানুষের মধ্যে অসচেতনতা এবং ডেঙ্গু রোগের বাহক অ্যাডিস মশা নিধনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে রাজধানীবাসীকে দীর্ঘ সময় ধরে ডেঙ্গু জ্বরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।

অ্যাডিস মশাবাহিত চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাস রয়েছে। এগুলো হলো ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪। এবার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হচ্ছে ‘হেমোরেজিক’-এর ক্ষেত্রে। সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করা না হলে এতে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। গত বছর স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি (আইইডিসিআর) চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণকক্ষের মাধ্যমে এর সার্বিক তত্ত্বাবধানসহ সারা দেশে চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করেছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সে-রকম ভূমিকা রাখা জরুরি। মশা নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনকে সহায়তা ও গণমাধ্যমকে হালনাগাদ তথ্য দেওয়ার কাজটিও এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদফতর পালন করতে পারে। যেহেতু অ্যাডিস মশা ডেঙ্গু রোগের জীবাণু বহন করে, সেহেতু এই মশার বংশবৃদ্ধি রোধ, নিধন ও প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সবার আগে। আমরা জানি, জলাবদ্ধ জায়গায় অ্যাডিস মশার জন্ম। সুতরাং আমাদের বাড়িঘরের চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। আর তাই কোমলপানীয়ের ক্যান, টিনের কৌটা, টায়ার, মাটির পাত্র, বোতল, নারিকেলের মালা অর্থাৎ পানি ধারণ করে এমন কোনো পাত্র জমিয়ে রাখা যাবে না।

মশার ওষুধ ছিটানোর ক্ষেত্রে প্রতিবছরই আমাদের দুই সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। গত মে মাসে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অভিযানে ১৮টি বাড়ির মধ্যে ১১টি বাড়িতে অ্যাডিস মশার লার্ভা পাওয়ার ঘটনা জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। সুতরাং এ রোগ প্রতিরোধে একদিকে যেমন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রয়োজন, তেমনি অন্যদিকে জনসাধারণের সচেতনতা জরুরি। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করা বাঞ্ছনীয়। পাশাপাশি পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হলগুলোতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে তাদের সঠিক চিকিৎসার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বহন করা আবশ্যক। বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত তাদের শিক্ষার্থীদের প্রতি নজর দেবে বলে আশা রাখি। এসব আক্রান্ত শিক্ষার্থীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১