আপডেট : ২১ November ২০১৮
পৃথিবীর প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষের বাস দক্ষিণ এশিয়ায়। এ অঞ্চলে দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও অপুষ্টির প্রবণতাও তুলনামূলক বেশি। রয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, দক্ষ মানবসম্পদ আর অবকাঠামোর অভাবও। অথচ এই অঞ্চলকে পাশ কাটিয়ে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন সম্ভব নয়। এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও দাতা সংস্থার পাশাপাশি সার্কের মতো আঞ্চলিক সংস্থাগুলোরও সক্রিয় ভূমিকা দরকার। কিন্তু সার্কের বর্তমান অবস্থায় সেটা সম্ভব নয়। তাই এই অঞ্চলের উন্নয়নে নতুন একটি আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) আয়োজনে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় এসডিজি : নতুন কাঠামোর সন্ধানে’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে এমন মতামত উঠে আসে। দুই দিনের সেমিনারের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উগদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউএস-এসক্যাপের দক্ষিণ এশিয়া ও পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের প্রধান ড. নগেশ কুমার, জার্মানভিত্তিক সংস্থা ফ্রেডরিক এবার্ট স্টিফটুং (এফইএস) বাংলাদেশ অফিসের আবাসিক প্রতিনিধি টিনা ব্লম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। প্রধান অতিথির বক্তব্যে গওহর রিজভী বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ করার সামর্থ্য ও ইচ্ছার ওপর এসডিজির প্রতিটি লক্ষ্য অর্জন নির্ভর করে। একক কোনো সংস্থা বা মন্ত্রণালয়ের কাজে লক্ষ্য পূরণ হবে না। সব মন্ত্রণালয়কে সম্মিলিতভাবেই কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। দক্ষ মানবসম্পদেরও অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ সফল হয়েছিল। সময়ের ব্যবধানে এসডিজির চ্যালেঞ্জ তুলনামূলক বেশি। লক্ষ্যপূরণও বেশ কঠিন হবে। তবে সে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সার্কের বিকল্প হিসেবে কার্যকর কোনো সংস্থা গড়ে তোলার কথা বলেন তিনি। মূল প্রবন্ধে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এসডিজি অর্জন করতে চাইলে এই মুহূর্তে আঞ্চলিক কাঠামোর উন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, সার্ক কার্যকর না হওয়ায় জনপ্রত্যাশার সঙ্গে আমাদের আঞ্চলিক কাঠামোর পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। এই পার্থক্য দূর করার জন্য হয়তো নতুন ধরনের পদ্ধতি এবং নতুন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর প্রয়োজন পড়বে। সেই কাঠামো জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। এমনকি রাজনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। দেবপ্রিয় বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে। আর তার জন্য নতুন জ্ঞানের দরকার, নতুন বিশ্লেষণের দরকার। নতুন জ্ঞান এবং বিশ্লেষণ নিয়ে নীতিনির্ধারকদের নতুন কর্মপন্থার অনুসন্ধান করতে হবে। এটা করতে না পারলে বৈশ্বিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে আঞ্চলিক সহযোগিতার বাড়তি সুযোগ হারাতে হবে। ড. নাগেশ কুমার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় দরিদ্র, ক্ষুধা ও অপুষ্টির প্রকোপ রয়েছে। এ অঞ্চলকে বাদ দিয়ে এসডিজি অর্জন সম্ভব নয়। দক্ষিণ এশিয়াকে এগিয়ে নিতে হলে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহায়তায় গুরুত্ব বাড়াতে হবে। এ জন্য এই অঞ্চলের দেশগুলোর সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। বহুজাতিক সংস্থাগুলোরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।এসডিজি অর্জনে সার্কের বিকল্প খোঁজার তাগিদ
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১