আপডেট : ০৮ November ২০১৮
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলের এই মধ্যবর্তী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দ্বিধাহীনভাবে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত দুই বছরের মেয়াদে রিপাবলিকানদের হাতে থাকা উভয় কক্ষের নিয়ন্ত্রণ আর নেই। সিনেটের আধিপত্য ক্ষমতাসীন রিপাবলিকানরা ধরে রাখতে সক্ষম হলেও নিম্নকক্ষ অর্থাৎ প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের তুমুল জয়ের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে বহুদূর। তবে সবচেয়ে যে বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, এই নির্বাচনে যদিও ট্রাম্প কোনো প্রার্থী নন তবে দেশটির বেশিরভাগ ভোটারই মনে করেন, এই নির্বাচন হচ্ছে প্রথম দু’বছর ক্ষমতায় থাকার সময় তার কাজের ওপর গণভোট। পার্লামেন্টের দুই কক্ষের নিয়ন্ত্রণ এবার দুই দলের হাতে চলে যাওয়ায় রিপাবলিকান পার্টির একচেটিয়া আধিপত্যে ধস নেমেছে। এর ফলে গত দুই বছর ধরে ট্রাম্প যেভাবে যেকোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে এবার সেটা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছে ওয়াশিংটন পোস্ট। এ উচ্চকক্ষ বা সিনেটে নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছে ট্রাম্পের দল। সিনেটের একশ আসনের মধ্যে ৫১টি নিশ্চিত করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ৫৪ আসন থেকে সামান্য দূরে আছে রিপাবলিকানরা। বিপরীতে ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছে ৪৬টি আসন। এর ফলে ট্রাম্প নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় নিয়োগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নিজের খেয়ালখুশি ব্যবহার করতে পারবেন। বিশেষত নির্বাচনের আগেই যেখানে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ট্রাম্পের পছন্দের ব্রেট কাভানাকে। বিপরীতে গত জাতীয় নির্বাচনে অভাবনীয় হারের দুই বছর পর আলোর মুখ দেখছে ডেমোক্র্যাটরা। প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৩৮টি আসন নিজেদের দখলে নিয়ে রাজনীতির মাঠে শক্ত অবস্থানে ফিরে এসেছে ডেমোক্র্যাট শিবির। নিম্নকক্ষের ২১৮ আসনের যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সীমা তা বেশ অনায়াসেই পার হয়ে এলো দলটি। এর মধ্য দিয়ে গত আট বছরের মধ্যে প্রথম প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ পেল দলটি। নিম্নকক্ষে ডেমোক্র্যাটদের আধিপত্যের অর্থ বেশ সুদূর প্রসারী হবে বলেই মনে করছে ওয়াশিংটন পোস্ট। মার্কিন এ গণমাধ্যমটি বলছে, প্রতিনিধি পরিষদে জয়ের মধ্য দিয়ে ডেমোক্র্যাটরা এবার গত জাতীয় নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পেছনে রাশিয়ার যোগসাজশ নিয়ে তদন্ত ত্বরান্বিত করা, প্রেসিডেন্টের ব্যবসায়িক সংশ্লিষ্টতা-আয়কর বিবরণী, মেক্সিকো সীমান্তে বেড়া দেওয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, রিপাবলিকান বিল আটকে দেওয়া এবং প্রেসিডেন্টকে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি করতেও পারবে। প্রেসিডেন্টকে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি করতে নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেই চলে। এ ছাড়া গভর্নর পদে ৫০ অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ২৫টি আসন রয়েছে রিপাবলিকানদের হাতে আর ২০টিতে জয় পেয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। সব মিলিয়ে দেশটিতে আর একচেটিয়া ক্ষমতার আসনে নেই রিপাবলিকানরা। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের ভরাডুবির পেছনে রয়েছে তরুণ ও নারী ভোটাররা। পূর্ব জরিপে দেখা গেছে, অভিবাসন, স্বাস্থ্যনীতি, জাতি-বিদ্বেষসহ বিভিন্ন ইস্যুতে উদ্বিগ্ন দেশটির তরুণ প্রজন্ম। এসব কারণে তরুণদের বেশিরভাগই ব্যক্তিগতভাবে ট্রাম্পের বিরোধী। এবার মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগাম ভোটে তার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। সাধারণত মধ্যবর্তী নির্বাচনে বয়স্ক ভোটারের আধিপত্য থাকে। ২০১৪ সালের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, এবার আগাম ভোট ও বিদেশ থেকে যারা ভোট দেন, তাদের মধ্যে ১৮-২৯ বছরের তরুণ ভোটারের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজ্য আরিজোনা, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, ইলিনয়, নেভাদা ও টেক্সাসে তরুণরা এবার উল্লেখযোগ্যভাবে সাড়া দিয়েছেন।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১