বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৯ October ২০১৮

জলবায়ু পরিবর্তনে সুসংহত অর্থনীতির মডেলে নোবেল

সুসংহত অর্থনীতির মডেলে নোবেল পেলেন অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম ডি নরডাস ও পল এম রোমার ছবি : ইন্টারনেট


জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির মধ্যেই বিশ্ব অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণের মডেল এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন কীভাবে বাজার অর্থনীতির ভিতকে আরো সুসংহত করতে পারে তার দিশা দেখিয়ে চলতি বছরের অর্থনীতির নোবেল জিতেছেন দুই মার্কিন অর্থনীতিবিদ। গতকাল সোমবার স্টকহোমে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস চলতি বছরের এই পুরস্কার জয়ী হিসবে অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম ডি নরডাস ও পল এম রোমারের নাম ঘোষণা করে। পুরস্কারের অর্থ তারা সমান ভাগে ভাগ করে নেবেন।  নোবেল কমিটির ওয়েবসাইট নোবেল প্রাইজ ডটওআরজিতে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনকে দীর্ঘমেয়াদে সামষ্টিক অর্থনীতির সঙ্গে একীভূত করে বিশ্লেষণের স্বীকৃতি হিসেবে উইলিয়াম ডি নরডাসকে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সামষ্টিক অর্থনীতি এবং জলবায়ুর মধ্যে পারস্পরিক প্রভাবের একটি সংখ্যাত্মক মডেল দাঁড় করিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন, জলবায়ু ও অর্থনীতি কীভাবে একটি অন্যটির ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। এই মডেলটি দাঁড় করাতে নরডাস গেল শতকের সত্তরের দশক থেকেই কাজ শুরু করেন। সেই সময় বিজ্ঞানীরা জীবাস্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে অর্থনীতির চাকাকে সচল করার প্রবণতা জলবায়ুতে যে নেতিবাচক প্রভাব রাখছে তার আলোচনা শুরু করেছিলেন। মানব সভ্যতার কথিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে জলবায়ুতে যে প্রভাব পড়বে তা ব্যাখা করতে তিনি তখন পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও অর্থনীতির তত্ত্বগুলোকে একীভূত করে ব্যাখ্যা করার কাজ শুরু করেন। তখন থেকেই তিনি বলতে শুরু করেন, মানুষের কর্মকাণ্ডই শুধু জলবায়ুকে হুমকির মধ্যে ফেলছে না বরং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও তাতে বিরাট ভূমিকা রাখছে।

পল এম রোমারের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোমারকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে দীর্ঘমেয়াদে সামষ্টিক অর্থনীতির সঙ্গে একীভূত করে বিশ্লেষণের স্বীকৃতি হিসেবে। নিউইয়র্কের ইউনিভার্সিটি স্টার্ন স্কুল অব বিজনেসের অধ্যাপক রোমার দেখিয়েছেন কীভাবে অর্থনৈতিক শক্তিগুলো নতুন নতুন ধারণা এবং উদ্ভাবন সৃষ্টির জন্য সংস্থাগুলোর ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য তিনি যে তত্ত্ব দিয়েছেন তা এন্ডোজেন প্রবৃদ্ধি তত্ত্ব নামে পরিচিত। এই তত্ত্বে রোমার দেখিয়েছেন, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন অর্থনীতির পরিধিকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে সেই চিত্র। আবার অর্থনৈতিক পরিবর্তন দশকের পর দশক কীভাবে উদ্ভাবনকে নিয়ন্ত্রণ করেছে তার চিত্রও আছে রোমারের তত্ত্বে। আশির দশকে রোমার যখন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির গবেষক তখনই এই তত্ত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেন। তখনই তিনি দেখেন প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে থাকা দেশ ও অন্যান্য দেশের আয় বৃদ্ধির বিষয়টি একরকম হয় না। তিনিই প্রথম ব্যক্তি হিসেবে একটি মডেলের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হন। 

নোবেল কমিটি বলছে, উইলিয়াম ডি নরডাস ও পল এম রোমার দুজনের মডেলই টেকসই অর্থনীতির ভিতকে আরো মজবুত করতে প্রত্যেকটি দেশের সরকারকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহারের নীতিগত পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখবে।

উইলিয়াম ডি নরডাস যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক। ১৯৪১ সালে তিনি দেশটির নিউ মেক্সিকোতে জন্মগ্রহণ করেন। ইয়েল ইউনিভার্সিটিতেই পড়াশোনা করেন তিনি।

পল এম রোমার ১৯৫৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভারে জন্মগ্রহণ করেন। শিকাগো ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

যৌন কেলেঙ্কারির মুখে এ বছর রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার স্থগিত রাখে। আগামী ১০ ডিসেম্বর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে জয়ীদের হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১