আপডেট : ২৩ September ২০১৮
ফারজানা বীথি জন্মের পর থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত সময়কালকে নবজাতক কাল বলে। জীবনের সবচেয়ে কম ব্যাপ্তির সময় হলেও এটি একটি শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় একটু অযত্ন শিশুর নাজুক শরীরের জন্য বেশ মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারে। অপরিচ্ছন্নতায় হতে পারে ইনফেকশনও। তাই নবজাতক মিশুর প্রারম্ভিক যত্নের কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো। জন্মমুহূর্তের পরপর শিশুর জন্মের পরপরই গা মুছে তাকে নরম কাপড়ে মুড়িয়ে দিতে হবে। জন্মের সময় শিশু তার ত্বকে একটি প্রাকৃতিক সুরক্ষা-প্রাচীর নিয়ে জন্মায়। এটা হলো এমিওনিটিক ফ্লুইড। এর ওপর ভারনিক্স ক্যাসোসা নামে আরেকটি লেয়ার থাকে। এই পাতলা সাদা আবরণটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অনেক সময় এই পাতলা আবরণটি তেল অথবা সাবান দিয়ে তুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়। অথচ ছয়-সাতদিনের মধ্যে এটি আপনা আপনি পরিষ্কার হয়ে যায়। নবজাতকের যত্নে প্রথম প্রয়োজন নিজের পরিচ্ছন্নতা নবজাতক শিশুকে পরিচর্যা করার জন্য সবার আগে নিজের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। শিশুকে পরিষ্কার করার আগে নিজের হাতটি ধুয়ে নিন। ব্যবহার করুন জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ অথবা ইন্সট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজার। শিশুকে কেউ কোলে নেওয়ার আগে তার হাত ধুয়ে নিতে বলুন। শিশুর নাভির যত্ন জন্মের পর সবচেয়ে স্পর্শকাতর অবস্থায় থাকে তার নাভি। জন্মের পর শিশুর নাভি যত বেশি শুষ্ক রাখা যাবে, তত দ্রুত নাভি শুকিয়ে ঝরে যাবে। তাই নাভি শুকনো, পরিষ্কার ও খোলামেলা রাখতে হবে। এজন্য নাভিতে তেল, সাবান, লোশন বা পানি যাতে না লাগে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। নাভি তাড়াতাড়ি শুকানোর জন্য অনেকেই নাভিতে বিভিন্ন জিনিসের প্রলেপ দেন। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশংকাই বেশি। তাই নাভিতে কোনো কিছু লাগানো থেকে বিরত থাকুন। তবে মাঝে মাঝে তুলার বল বা কটন বাডে অ্যালকোহল লাগিয়ে নিয়ে আস্তে আস্তে নাভি পরিষ্কার করুন। সাধারণত সাত থেকে চৌদ্দ দিনের মধ্যে নাভি শুকিয়ে আপনাআপনি ঝরে যাবে। শিশুর চোখের যত্ন বাচ্চার চোখের ময়লা পরিষ্কার করতে ভুলেও খালি হাতে খুটতে যাবেন না। কুসুম গরম পানিতে নরম কাপড়ের টুকরো চুবিয়ে নিন। হালকা করে চেপে পানি ঝরিয়ে মুছে নিন বাচ্চার চোখ। অনেক সময় অসাবধানে বাচ্চার চোখে বুকের দুধ যেতে পারে। চোখে বুকের দুধ ঢুকে গেলে বাচ্চার চোখে প্রদাহ হতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন। কিছু কিছু শিশুর চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। নরম কাপড়ে বার বার মুছে নিন। এ সমস্যা এক দুই মাস পর ঠিক হয়ে যায়। বেশি সমস্যা মনে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন । বাচ্চার কান পরিষ্কার রাখা কানের ভেতরে কটনবাড দিয়ে পরিষ্কার করতে যাবেন না। কানের পর্দায় আঘাত লাগতে পারে। এ ছাড়া কানের ভেতরে কিছু লোম থাকে যা বাইরের ময়লাকে ঠেলে দেয়। কটনবাডের আঘাত থেকে এদের রক্ষা করা জরুরি। পরিষ্কার রাখুন কানের উপরিভাগ। কটনবল বা নরম কাপড়ে মুছে দিন। জিহ্বার যত্ন দুধ খাওয়ার কারণে শিশুর জিহ্বায় সাদা আস্তর পড়তে দেখা যায়। পরিষ্কার নরম শুকনো কাপড় ব্যবহার করে মুছে দিন বাচ্চার ছোট্ট জিভ। নাকের যত্ন শিশু মাতৃগর্ভে থাকাকালীন মায়ের গর্ভের নানা ধরনের ময়লা নাকে-মুখে প্রবেশ করে। জন্মের পর কানের মতে নাাকেরও যত্ন প্রয়োজন। নাকের ময়লা জমে শক্ত হয়ে গেলে শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হতে পারে। নাকের ময়লা পরিষ্কারে কটনবাড না দিয়ে নরম সুতি কাপড়ে কোনা পেঁচিয়ে পরিষ্কার করার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে শিশুর আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। নাকে সর্দি বা ময়লা জমে বন্ধ হয়ে থাকলে শিশু মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় এবং দুধ টানতে চায় না। সুতরাং খেয়াল রাখুন এবং পরিষ্কার করুন। শিশুকে গোসল করানো প্রথমবার শিশুকে গোসল করানোর ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। তাই অভিজ্ঞ কারো হাতে গোসল করানোই ভালো। কেননা নাভি না শুকানো পর্যন্ত ডাক্তাররা সাধারণত শিশুকে গোসল করাতে বারণ করে থাকেন। তাই এ সময় শিশুর শরীর মুছে দেওয়াই উত্তম। প্রথম গোসলের দিন পানির উষ্ণতা যাচাই করে নিন। নরম কাপড়ে সাবান মেখে আগে সমস্ত শরীর আলতোভাবে পরিষ্কার করে এরপর পানি দিয়ে গা ধুয়ে নিন। মাথায় পানি দেওয়ার সময় সরাসরি পানি না দিয়ে কাপড় পানিতে ভিজিয়ে মাথা ধুয়ে দিন এবং সাথে সাথে শুকনো কাপড় দিয়ে মাথা মুছে দিন। মাথা ভেজা থাকলে ঠান্ডা লেগে যেত পারে। এরপর গলা, বুক ও হাত মুছুন।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১