আপডেট : ০২ August ২০১৮
রাজধানীতে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষার যে পদক্ষেপ নিয়েছে আজ বৃহস্পতিবার তাতে আটকা পড়েছিলেন অনেকে। তাদের মধ্যে ছিলেন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও পুলিশের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও। আজ দুপুরে ধানমন্ডি ১৫ নম্বর সড়কে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে চালকের লাইসেন্স না থাকায় পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর গাড়ি আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে মন্ত্রী অন্য গাড়িতে ওই স্থান ত্যাগ করে গন্তব্যে রওয়ানা হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা গাড়ি আটকে দেখতে পায় সেটি পানিসম্পদ মন্ত্রীর গাড়ি এবং চালকের লাইসেন্স নেই। এ সময় শিক্ষার্থীরা মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তাদের বলতে শোনা যায়, ‘স্যার অ্যালাউ করলো ক্যান, স্যার অ্যালাউ করলো ক্যান। স্যার অ্যালাউ করলো ক্যান, আমরা জানতে চাই। ড্রাইভারের লাইসেন্স নাই, স্যার কেন অ্যালাউ করেছে।’ কিছুক্ষণের মধ্যেই মন্ত্রী মঞ্জু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে গাড়ি থেকে নেমে আসেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের করতালি ও উচ্ছ্বাসের শব্দ শোনা যায়। তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিজ’ স্লোগানও দেয়। গাড়িচালক ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে না পারায় সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকে শনির আখড়ায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এ সময় এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাতে থাকে তারা। তখন তাকে মুক্ত করতে এগিয়ে যান কদমতলী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মমিনুল ইসলাম রাজীব। বাক-বিত্লায় জড়িয়ে পড়লে এক পর্যায়ে তার ওপর চড়াও হয় শিক্ষার্থীরা। পরে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ইন্স্যুরেন্স আপডেট না থাকার অভিযোগে পুলিশ মামলা করলে পঙ্কজ দেবনাথের গাড়িটি ছেড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্লোগান দেয়, ‘গাড়ির লাইসেন্স নাই, এমন সংসদ সদস্য আমরা চাই না’, ‘ভুয়া, ভুয়া’। দুপুর ১টার দিকে কারওয়ান বাজার এলাকায় নৌপুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) হাবিবের গাড়ি আটকায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা তার গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে ব্যর্থ হন। গাড়ির চালকও তার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হন। পুলিশের পোশাক পরিহিত দেহরক্ষী নিয়ে ডিআইজি হাবিব কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়া চলছেন দেখে বিস্মিত হন উপস্থিত সবাই। এ সময় হাবিব শিক্ষার্থীদের বলেন, এটি সরকারি গাড়ি, গাড়িটির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। লাইসেন্স না থাকায় ড্রাইভারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও শিক্ষার্থীদের জানান তিনি। পরে গাড়িটি উল্টো পথে পাঠিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এদিন ধানমন্ডি ২ নম্বর রোডে সিটি কলেজের পশ্চিম পাশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ ১১-৬৭৬০) আটকায় শিক্ষার্থীরা। এসময় চালক তার নিজের ও গাড়ির কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এরপর পুরো গাড়িতে রং দিয়ে শিক্ষার্থীরা লিখে দেয়- ‘লাইসেন্সবিহীন চোরাই গাড়ি’, ‘চোরাই গাড়ি’, ‘আমার লাইসেন্স নাই’, ‘আমি চোর’, ‘নয় দফা দাবি মানতে হবে’ ইত্যাদি। এছাড়া পুরো গাড়িতে ‘অপরাধী’ ও ‘চোর’ শব্দ লিখে দেয় আন্দোলনকারীরা। ভাইরাল হওয়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ছাত্ররা পুলিশের একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-ঙ-১১-১০১৬) আটকে কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইছে। এরপর ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য এসে গাড়ির চালক পুলিশ কনস্টেবলকে বলছেন, আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই? ভেতর থেকে চালক কনস্টেবল কী বলছেন- তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল না। পরে ওই ট্রাফিক সদস্য তাকে বলছেন, বের হন, মামলা দেব। গাড়ি সাইড করেন। এরপর পুলিশের ওই গাড়িচালক নেমে যান। ওই গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেন ট্রাফিক সদস্য। এ সময় শিক্ষার্থীরা উল্লাস করে চিৎকার করে ওঠে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১