বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ৩০ July ২০১৮

ব্যবসায়ী হত্যা দায়ে দুই বন্ধুর ফাঁসি

বায়ে নিহত মওদুদ আহম্মেদ শাওন। ডানে মৃত্যুদণ্ড প্রপ্ত সাজ্জাদ হোসেন বাসুকে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ ছবি : বাংলাদেশের খবর


প্রেমে ব্যর্থ ও পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের ব্যবসায়ী মওদুদ আহম্মদ শাওন (২৪) হত্যাকান্ডের ঘটনায় দুই বন্ধুর মৃত্যুদ-াদেশ দিয়েছেন আদালত। আদেশে বলা হয়, মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এঁদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দ- কার্যকর করতে হবে।

হত্যাকা-ের চার বছর পর সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (১ম) আদালতের বিচারক রবিউল আউয়াল এ আদেশ দেন।

মৃত্যুদ-াদেশ প্রাপ্ত আসামিরা হলেন সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়া এলাকার মোশারফ মেম্বারের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন বাসু (৩০) ও সোনারগাঁ পোরাব এলাকার নজরুল ইসলাম ভূইয়ার ছেলে রাকিব হোসেন বাবুল ওরফে বাবু। রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন সাজ্জাদ হোসেন বাসু। আর রাকিব হোসেন বাবুল ওরফে বাবু ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।

নিহত মওদুদ আহম্মদ শাওন সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল ম-লপাড়া এসও রোড এলাকার মো. নাসির উদ্দিনের ছেলে। সে তেল (ফার্নেস অয়েল) ব্যবসায়ী।

নারায়ণগঞ্জ আদালতে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাকসুদা আহমেদ জানান, তিন কারণে মওদুদ আহম্মদ শাওনকে হত্যা কারা হয়। প্রথমে তেল ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সাজ্জাদ হোসেন বাসুর কাছ থেকে মওদুদ আহম্মদ শাওন ২ লাখ টাকা পাওনা ছিল। দ্বিতীয় হলো একটি মেয়েকে পলাতক আসামী রাকিব হোসেন বাবুল ওরফে বাবু ভালোবাসতো কিন্Íু ওই মেয়েকে নিহত মওদুদ আহম্মদ শাওন তার চাচাত ভাই আকাশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কারণে পলাতক আসামী প্রেমে ব্যর্থ হয়। এছাড়াও মওদুদ আহম্মদ শাওনের বন্ধু সোহেল মিয়া আসামী সাজ্জাদ হোসেন বাবুর কাছ থেকে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। আর ওই পাওনা টাকার স্বাক্ষী ছিল শাওন।

পিপি মাকসুদা আহমেদ জানান, ২০১৪ সালের ৯ জুলাই সন্ধ্যায় ছোট বেলার বন্ধু সাজ্জাদ হোসেন বাসু ও ব্যবসায়ী বন্ধু রাকিব হোসেন বাবুল ওরফে বাবু লাভের টাকা দিবে বলে বাসা থেকে ঢেকে নিয়ে যায়। রাত ৮টায় সিএনজি অটোরিকশায় করে রাত ৯টায় সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়নের দলরদী গ্রামে যায়। সেখানে আসামী রাকিব ২টি চাকু, ২টি গামছা কিনে খড়ের ঝোপে রেখে আসে এবং ৩টি ফেনসিডিল কিনে একটির মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে শাওনকে খাওয়ায়। ঘুমের ওষুধ খাওয়ার পর মওদুদ আহম্মেদ শাওন অচেতন হয়ে পড়ে। তখন বাসু ও রাকিব শাওনকে কাধে করে ধনিচা খেতের পাশে নিয়ে শুয়ে দেয়। তখন বাসু গামছা দিয়ে মুখচোখ ধরে এবং রাকিব চাকু দিয়ে শাওনের গলা জবাই করে হত্যা করে এবং পেটে বুকে চাকু দিয়ে আঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আসামীরা শাওনের লাশ ফেলে সেখান থেকে চলে আসে।

পিপি মাকসুদা আহমেদ আরো জানান, ২০১৪ সালের ১০ জুলাই সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়নের দলরদী গ্রামের একটি খেত থেকে পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। এবং ময়নাতদন্ত শেষে মাসদাইর কবরস্থানে বেওয়ারিস হিসেবে লাশ দাফন করা হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খবর পেয়ে ১২ জুলাই শাওনের পরিবারের সদস্যরা লাশের ছবি ও পোশাক দেখে শাওনের লাশ সনাক্ত করে। ঘটনায় নিহতের বাবা নাসির উদ্দিন বাসু ও রাকিবের নাম উল্লেখ করে আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ সাজ্জাদ হোসেন বাসুকে গ্রেফতার করলেও রাকিব হোসেন বাবুল ওরফে বাবু পলাতক ছিল। এ ঘটনায় সাজ্জাদ হোসেন বাসু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ৪০ জনের মধ্যে ২৩জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

নিহতের বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, এ রায়ে আমি ও আমার পরিবার সন্তুষ্ট। এখন উচ্চ আদালতেও যেন রায় বহাল থাকে ও পলাতক আসামী রাকিবকে গ্রেফতার করা হয় এ দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১