বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৮ July ২০১৮

ফাইভজি নেটওয়ার্ক

মানুষের জীবনযাত্রা যেভাবে পাল্টে দেবে এ প্রযুক্তি

একটি ৫০ গিগাবাইট সাইজের ফাইল ডাউনলোড করতে সময় লাগবে দুই মিনিটেরও কম ছবি : ইন্টারনেট


পঞ্চম প্রজন্মের দ্রুতগতির তারবিহীন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি যা ফাইভজি নামেই বেশি পরিচিত। পুরো প্রযুক্তি বিশ্বেই এখন বেশ আলোচিত বিষয় হলো ফাইভজি। এরই মধ্যে বিশ্বের কয়েকটি দেশে ফাইভজির নানা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এদিক থেকে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। ২৫ জুলাই দেশে এ নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির পরীক্ষা চালিয়েছে সরকার। এতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে চীনের নেটওয়ার্ক পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। সরকার বলছে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ফাইভজি প্রযুক্তি চালু করা হবে। ফাইভজি প্রযুক্তি চালুর দিক থেকে প্রথম সারিতে থাকবে বাংলাদেশ, এমন প্রত্যাশার কথাও জানানো হয়েছে।

তবে এ প্রযুক্তি নিয়ে সঠিক ধারণা নেই, এমন যে কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কেমন হবে এর ব্যবহার এবং কীভাবে ফাইভজির মাধ্যমে মানুষ উপকৃত হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

কতটা দ্রুতগতির হবে ফাইভজি?

২০১৭ সালের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে স্যামসাং একটি ফাইভজি হোম রাউটার প্রদর্শন করেছিল। এ রাউটারটিতে ৪ গিগাবিট পার সেকেন্ড বা প্রায় ৫০০ মেগাবাইট পার সেকেন্ড গতি পাওয়া গিয়েছিল সে সময়। এ হিসেবে একটি ৫০ গিগাবাইট সাইজের ফাইল ডাউনলোড করতে সময় লাগবে দুই মিনিটেরও কম। এ ছাড়া ৪ মিনিটে ডাউনলোড করা যাবে ১০০ গিগাবাইট ৪কে মুভি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলে এর কয়েক গুন পর্যন্ত গতি পাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছেন এ প্রযুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

ফাইভজির মাধ্যমে যেভাবে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসবে

ফাইভজি চালু হলেও সবচেয়ে বেশি যে কাজে লাগবে তা হলো অতিদ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা। এ প্রযুক্তিতে একজন গ্রাহক অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। অন্তত চার গিগাবিট পার সেকেন্ড গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা সম্ভব হবে। বড় আকারের ফাইল আপলোড কিংবা ডাউনলোড হবে মুহূর্তের মধ্যেই। এ ছাড়া ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ভিডিও লাইভ স্ট্রিম করা আরো সহজ হয়ে যাবে।

ইন্টারনেট অব থিংস

স্মার্ট টিভি, স্মার্ট রেফ্রিজারেটর থেকে শুরু করে ওয়াশিং মেশিন, নিরাপত্তা পণ্যসহ বাসাবাড়ির সব ইলেক্ট্রনিকস পণ্য যুক্ত থাকবে একটি নেটওয়ার্কের মধ্যে যা ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি নামে পরিচিত। ফাইভজি নেটওয়ার্কের কল্যাণে এ বিষয়টি আরো জনপ্রিয়তা পাবে।

টেলিমেডিসিন এবং রিমোট সার্জারি

চিকিৎসা ক্ষেত্রে টেলিমিডিসিনের জনপ্রিয়তা দিন দিনই বাড়ছে। এর মাধ্যমে চিকিৎসক দূর থেকেই রোগীর চিকিৎসা করতে পারেন। ফাইভজি চালু হলেও টেলিমেডিসিন সেবা আরো সম্প্রসারিত হবে। টেলিমেডিসিনের পরবর্তী সংস্করণ হবে রিমোট সার্জারি। একজন সার্জন দূর থেকেই শুধু প্রযুক্তির ব্যবহার করে রোগীর সার্জারি সম্পন্ন করতে পারবেন। বর্তমানে সীমিত আকারে রিমোট সার্জারি প্রচলিত রয়েছে। তবে ইন্টারনেটের গতি ততটা দ্রুত না হওয়ায় কিছুটা ল্যাক থেকে যায়। ফাইভজি চালু হলে এ সীমাবদ্ধতাও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এ ছাড়া মানুষের দেহে স্থাপিত বিভিন্ন ধরনের হেলথ মনিটরিং ডিভাইসের মাধ্যমে দূর থেকেই চিকিৎসক রোগীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে দেখতে পারবেন।

স্মার্ট সিটি

বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশই স্মার্ট সিটি বাস্তবায়নে কাজ করছে। স্মার্ট সিটিতে সবকিছুই থাকবে একটি নেটওয়ার্কে যুক্ত অবস্থায়। ট্রাফিক সিস্টেম, সিকিউরিটি সার্ভিলেন্স ক্যামেরা, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে জরুরি পরিবহন ব্যবস্থা সবকিছুই যুক্ত থাকবে এ নেটওয়ার্কে। স্মার্ট সিটি পরিচালনায় প্রয়োজন হবে খুবই দ্রুতগতির ইন্টারনেট। ফাইভজি নেটওয়ার্কের কল্যাণে যা একেবারেই সহজ হয়ে পড়বে।

ই-লার্নিং

অনলাইনে পড়ালেখা বা ই-লার্নিং বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। ঘরে বসে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইভ ক্লাস করা কিংবা ভিডিও ম্যাটেরিয়াল থেকে শেখা, সবই সম্ভব হচ্ছে এর মাধ্যমে। তবে ধীরগতির ইন্টারনেটের কারণে অনেক সময় এর পুরো সুবিধা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফাইভজি চালু হলে এক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন আসবে।

কবে চালু হবে ফাইভজি

ফাইভজি চালু করার জন্য এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর এ বছরের শেষের দিকে কিংবা আগামী বছরের শুরুর দিকে পঞ্চম প্রজন্মের তারবিহীন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি চালু করতে আগ্রহী। যুক্তরাজ্য ২০২০ সালে এ প্রযুক্তিতে প্রবেশ করার জন্য কাজ করছে।

ফাইভজি সমর্থিত স্মার্টফোন তৈরির জন্যও কাজ শুরু করেছে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। আগামী বছরেই বাজারে আসতে পারে ফাইভজি সমর্থিত স্মার্টফোন। এর বাইরে এ প্রযুক্তিতে ব্যবহারযোগ্য অন্যান্য ডিভাইসও বাজারে আসবে এ প্রযুক্তি চালু হলেই।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১