আপডেট : ০৬ July ২০১৮
চলতি বছরের মার্চ মাসে মারা যায় পৃথিবীর একমাত্র সাদা পুরুষ গণ্ডার সুদান। তখন আশঙ্কা করা হচ্ছিল সুদান নামের সেই গণ্ডারটির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে এই সাদা প্রজাতির গণ্ডার। তবে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির কল্যাণে সেই আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে সাদা গণ্ডারের একটি ভ্রূণ জন্ম দিতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। সুদান মারা যাওয়ার আগেই তার কিছু শুক্রাণু বা সিমেন সংগ্রহ করে রাখেন তারা। সুদানের আগেও সানি নামের আরেক গণ্ডারের সিমেন ইন ভিট্রো ফারটিলাইজেশন বা আইভিএফের মাধ্যমে একই প্রজাতির স্ত্রী গণ্ডারের ডিম্বাণুর সঙ্গে নিষিক্ত করান। বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে জানানো হয়েছে এই তথ্য। কেনিয়ার এল পাজেতা অভয়ারণ্যে সুদান যখন মারা যায়, তখন সেখানে ফাতু ও নাজনীন নামের এই প্রজাতির দুটি স্ত্রী গণ্ডার ছিল। তবে তাদের ডিম্বাণু না নিয়ে প্রাথমিকভাবে আগে সংগৃহীত ডিম্বাণুতে সুদানের জাতের অন্য একটি সাদা সংরক্ষিত শুক্রাণু প্রবেশ করানো হয়। তারপর সেটি একটি কৃত্রিম ডিম্বাশয় পরিবেশে রাখা হয় ইনকিউবেটরে। সেখানে নিষিক্ত ভ্রূণটিকে একটি নির্দিষ্ট সময় রাখার পর সেটি একটি সারোগেট মাদারের গর্ভাশয়ে স্থানান্তর করা হয়। তবে গবেষকরা বলছেন, গর্ভাশয়ে ভ্রূণটির মানিয়ে নেওয়া ও তার পরের ধাপগুলো সামাল দেওয়াটাই বড় চ্যালেঞ্জ। গর্ভাশয়ের পরিবেশে অভিযোজিত হওয়া আসলেই খুব কঠিন এটা ধাপ। গবেষক দলের একজন ও চেক রিপাবলিক প্রজাতন্ত্রের ক্রালাভা সাফারি পার্কের গণ্ডার সংরক্ষণ প্রচেষ্টার সমন্বয়ক জ্যান স্টিজস্কাল জানান, এই চ্যালেঞ্জটি থাকার পরও আরো কিছু সাদা গণ্ডারের ডিম্বাণুর সঙ্গে সুদানের আরো শুক্রাণুর নিষেক ঘটানো হবে। প্রয়োজেন হাইব্রিড জাতে সাদা গণ্ডারের ডিম্বাণুর সঙ্গেও নিষেক ঘটানো হবে সুদানের শুক্রাণুর। তিনি বলেন, এই পদ্ধতিটি যদি সত্যি সত্যি সফল হয় তবে বলা যায়, সাদা গণ্ডার বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। এখনো পৃথিবীতে ২০ হাজার সাদা গণ্ডার রয়েছে। তিনি আরো জানান, সুদান ছাড়াও আরো কয়েকটি সাদা জাতের গণ্ডারের শুক্রাণু সংরক্ষিত আছে তাদের কাছে। এদিকে এই খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন জার্মানির বার্লিন বন্যপ্রাণী গবেষক ও বার্লিন চিড়িয়াখানার কর্তা থমাস হাইল্ডব্যান্ডট। তিনি এই কাজকে সাদা গণ্ডারের প্রজাতি রক্ষার মেকানিজম হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, সত্যি সত্যি একটা বাচ্চা জন্ম নিলে দুটি বিষয় হবে। প্রথমত, এখনো এই জাতের যে নারীগুলো জীবিত আছে তাদের ডিম্বাণুর সঙ্গে সাদা পুরুষ গণ্ডারের শুক্রাণুর নিষেক ঘটিয়ে শুদ্ধ সাদা জাতের গণ্ডার জন্ম দেওয়া সম্ভব হবে। দ্বিতীয়ত, অন্য জাতের গণ্ডারের সঙ্গে সঙ্করায়নের মাধ্যমে হাইব্রিড জাতের সাদা গণ্ডার জন্ম দেওয়া যাবে। তিনি জানান, আগামী তিন বছরের মধ্যে ফাতু ও নাজনীনকেও সারোগেসি মাদার হিসেবে কাজে লাগানো হবে। তার মতে সাদা গণ্ডাররা আসলে প্রাকৃতিক নির্বাচন, বিবর্তন ইত্যাদির সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি। তবে তার আশা এই গবেষণাটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের আবার পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে পারে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১