আপডেট : ০৬ June ২০১৮
রাজধানীতে প্রতিদিন দুই কোটি পলিথিন জমছে বলে জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় নিজস্ব কার্যালয়ে ‘প্লাস্টিক দূষণ : পরিবেশের জন্য হুমকি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এই পরিসংখ্যান দিয়েছে সংগঠনটি। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনকে ঢাকার জলাবদ্ধতার জন্যও দায়ী হিসেবে চিহ্নিত করেছে পবা। অনুষ্ঠানে পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও পবার সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুস সোবহান বলেন, রাজধানীসহ সারা দেশে প্রায় ১২০০ কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরি হচ্ছে। এগুলোর বেশিরভাগই পুরান ঢাকাকেন্দ্রিক। ঢাকায় প্রতিদিন দুই কোটির বেশি পলিথিন ব্যাগ একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয়, যেগুলো পলিথিন বর্জ্য। এ বর্জ্য সামান্য বৃষ্টিতে নগরে জলাবদ্ধতার প্রকোপ বাড়িয়ে দিচ্ছে। গবেষণার তথ্য তুলে ধরে সোবহান জানান, বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ৭৯ শতাংশ প্লাস্টিক বা পলিথিন বর্জ্য পানিতে মিশে জলজ প্রাণীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত প্লাস্টিকের বোতল, বিভিন্ন সামগ্রী এবং পলিথিন ব্যাগের অধিকাংশই পুনর্ব্যবহার, পুনঃচক্রায়ন না করে যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে, যা পরবর্তী সময়ে খাল, নদী হয়ে সমুদ্রে গিয়ে পড়ছে। জলজ প্রাণী তা গ্রহণ করছে। জলজ প্রাণীর মাধ্যমে এই প্লাস্টিক আবার মানুষের খাদ্যচক্রেও প্রবেশ করছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। পবার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১০ সালে প্লাস্টিক ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৫০ হাজার টন। প্রতি বছর এই সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে পাঁচ হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং বড় শিল্প-কারখানায় ১২ লাখ টনের বেশি প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। দেশে এখন প্লাস্টিক পণ্যের জনপ্রতি ব্যবহার গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৫ কেজিতে। পবার আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশে প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহারে পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ অধিদফতরের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন। পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন ও বাজারজাতকরণের ওপর ২০০২ সালে নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও অধিদফতরের ‘নিষ্ক্রিয়তায়’ সেই আইন কার্যকর করা যায়নি বলে অভিযোগ করেন অধিদফতরেরই সাবেক কর্মকর্তা সোবহান। পরিবেশ অধিদফতরের পাশাপাশি পুলিশ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবহেলাকে দোষারোপ করে তিনি ‘রাজনৈতিক অঙ্গীকারের অভাবকেও’ প্লাস্টিক দূষণের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। প্লাস্টিক বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়ায় (রিসাইকেল) প্রযুক্তি ব্যবহারে পরিবেশ মন্ত্রণালয় বা অধিদফতরের সদিচ্ছা নেই বলেও মনে করেন তিনি। সভায় আলোচক হিসেবে যোগ দেন স্পারসোর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল কাদির, পবার সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, সম্পাদক শাহিন আহম্মেদ। প্লাস্টিকের ব্যবহার ও উৎপাদন কমিয়ে আনাসহ নিষিদ্ধ করা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেওয়া পদক্ষেপকে গুরুত্ব দিয়ে ‘আসুন প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি’ প্রতিপাদ্যে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১