আপডেট : ২৫ April ২০১৮
ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি ও ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ না করলে বিপদে পড়তে যাচ্ছে ফেসবুক, টুইটার, স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলো। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নিলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার মুখেও পড়তে পারে প্রতিষ্ঠানগুলো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তা কমিশনার জুলিয়ান কিং বলেছেন, ২০১৯ সালে ২৭ জাতির এই সংগঠনটির নির্বাচনের আগেই এ বিষয়ে একটা স্পষ্ট পরিকল্পনা চান তারা। সমপ্রতি ফেসবুকের তথ্য চুরি করে ক্যামব্রিজ অ্যানালেটিকা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে ভূমিকা রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে যেন তেমনটা না হয় সে জন্যই এই কঠোর অবস্থান বলে জানান জুলিয়ান কিং। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক খবরে বলা হয়েছে, কিং মনে করেন, অপব্যবহার ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে এখনই একটি স্বেচ্ছা নীতিমালা করা উচিত। আর যথাসময়ের মধ্যে তা যদি না হয় তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নকেই বিকল্প কিছু ভাবতে হবে বলে উল্লেখ করেন কিং। সে ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার স্বাভাবিক নিয়মেই ব্যবস্থা নেবে বলে গত বৃহস্পতিবার গার্ডিয়ানকে জানান জুলিয়ান কিং। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো কিংয়ের এই স্বেচ্ছা নীতিমালার ধারণাকে স্বাগত জানিয়েছে। ইউরোপে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমগুলোর প্রতিনিধিত্ব করা সংগঠন ডিজিটাল ইউরোপের মহাপরিচালক সিসিলিয়া বোনেফিল্ড দাল মনে করেন, এই প্রস্তাব মেনে নেওয়া সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর জন্য মঙ্গলজনক হবে। আর তারা সেটাই করবে। তিনি মনে করেন, কাউকে আক্ষরিক অর্থে সাজা দেওয়ার চাইতে দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়াটাই বড় সাজা। এদিকে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেরেমি হান্ট শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে ‘চোখ বুজে’ থাকলে চলবে না বলে হুশিয়ারি জানিয়ে ফেসবুক, গুগল, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোকে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, কমবয়সী শিশুদের অ্যাকাউন্ট খোলা বন্ধ এবং অনলাইনে শিশুদের হয়রানি বন্ধের ব্যাপারে তাদের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এ মাসের মধ্যে এসব কোম্পানিকে সরকারকে বলতে হবে। সেই সঙ্গে শিশুরা যাতে বেশিক্ষণ এসব সাইটে সময় না কাটায় সে ব্যবস্থা করারও দাবি জানানো হয়েছে। আর তাতে ব্যর্থ হলে কঠোর আইন প্রণয়নের হুমকি দিয়েছেন এই ব্রিটিশ মন্ত্রী। মন্ত্রী জেরেমি হান্ট তার চিঠিতে লিখেছেন, আমি উদ্বিগ্ন যে হাজার হাজার শিশু বয়সসীমা নিয়ে তোমাদের নীতি ভঙ্গ করে চলেছে এবং তা নিয়ে তোমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আমার আশঙ্কা, একটা পুরো প্রজন্ম অল্প বয়সে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকে মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং তোমরা সবাই একযোগে এ নিয়ে চোখ বন্ধ করে আছ। এদিকে শিশু সুরক্ষা নিয়ে চলা আলোচনার মধ্যেই ফেসবুকের বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চেয়ে ব্রিটিশ হাইকোর্টে একটি মামলা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মামলাটি আনছেন ব্রিটেনের স্বানামধন্য ভোক্তা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মানিসেভিং এক্সপার্ট ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা মার্টিন লিউয়িস। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, তার সুনাম কাজে লাগিয়ে প্রতারণা করতে ফেসবুকে অজানা অখ্যাত অন্তত ৫০টির মতো ভুয়া প্রতিষ্ঠান তাদের বিজ্ঞাপনে তার নাম এবং ছবি ব্যবহার করেছে। বার বার এ নিয়ে ফেসবুকের কাছে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। তিনি বলেন, মামলা এবং আইন ছাড়া এটা বন্ধ করা যাবে না। ফেসবুক ব্রিটেনের বাইরের কোম্পানি বলে আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে পারে না। অল্প কিছু ক্ষতিপূরণ দিয়ে ফেসবুক বার বার পার পেতে পারে না। তাদেরকে এই আচরণের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে। সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিজেদের শুধরে না নিলে ইউরোপে সত্যিই বড় ধরনের বিপদে পড়তে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমগুলো।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১