বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৪ April ২০১৮

সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণ সর্বোচ্চ ৭৫, সর্বনিম্ন ৩৫ লাখ টাকা


অবশেষে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে গৃহনির্মাণ ঋণ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে সরকার। অর্থ বিভাগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৩৫ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ঋণের সুদের হার হবে ৮ শতাংশ। তবে ঋণগ্রহীতা কর্মচারীরা দেবে ৫ শতাংশ সুদ। বাকি ৩ শতাংশ সুদ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে। আগামী অর্থবছর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা এ সুযোগ পাবেন।

তবে ঋণের পরিমাণ, সুদের হারসহ বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত হবে আজ মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে। অর্থ বিভাগের সচিব মুসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব এতে উপস্থিত থাকবেন বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, অর্থ বিভাগের খসড়া প্রস্তাব আজকের বৈঠকে চূড়ান্ত হলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সম্মতি নেওয়া হবে। এরপর এ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।

অর্থ বিভাগের খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী ১৮তম-২০তম গ্রেডে (৮ হাজার ২৫০ থেকে ৮ হাজার ৮০০ টাকা) অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীরা যারা ঢাকাসহ বিভাগীয় শহর বা মহানগর বা সিটি করপোরেশন এলাকায় চাকরিরত আছেন, তারা ৩৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। জেলা সদরের কর্মচারীরা পাবেন ২৫ লাখ এবং ২০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন অন্যান্য এলাকায় বসবাসরত কর্মচারীরা।

অর্থ বিভাগের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ১৪ থেকে ১৭তম গ্রেডে (৯ হাজার থেকে ১০ হাজার ২০০ টাকা) বিভাগীয় শহর, মহানগর বা সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য ৪০ লাখ, জেলা শহর এলাকা ৩০ লাখ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ২৫ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণের সুযোগ রাখা হবে। ১০ম-১৩তম গ্রেডের (১১ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা) চাকরিজীবীদের মধ্যে মহানগর এলাকার জন্য ৫৫ লাখ টাকা, জেলা শহর এলাকার জন্য ৪০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ঋণের প্রস্তাব করা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা।

৯ম-৬ষ্ঠ গ্রেডে (২২ হাজার থেকে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা) মহানগর এলাকার জন্য ৬৫ লাখ টাকা, জেলা শহর এলাকায় ৫৫ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকায় ৪৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

৫ম গ্রেডে (৪৩ হাজার টাকা বা তদূর্ধ্ব) মহানগর এলাকায় চাকরিজীবীরা ৭৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন জেলা শহর এলাকার কর্মচারীরা এবং ৫০ লাখ টাকা ঋণের সুযোগ পাবেন অন্যান্য এলাকার কর্মচারীরা। যেসব কর্মচারীর চাকরির বয়স ১৫ বছর হয়েছে কেবল তারাই এ ঋণের সুযোগ পাবেন বলে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে অলস টাকার পরিমাণ অধিক। অন্যদিকে এখন অবিক্রীত ফ্ল্যাটের সংখ্যাও বাড়ছে। এ অবস্থায় কর্মচারীরা ব্যাংক ঋণের সুযোগ পেলে একদিকে ব্যাংকের বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে, অন্যদিকে আবাসন খাতও চাঙ্গা হবে।

অর্থ বিভাগ সূত্র আরো জানায়, ১৯৮২ সাল থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গৃহঋণ সুবিধা চালু রয়েছে। তখন সরকারি চাকরিজীবীদের যে বেতন কাঠামো ছিল, সে অনুযায়ী মূল বেতনের ৪৮ মাসের সমপরিমাণ (১ লাখ ২০ হাজার টাকা) গৃহনির্মাণ খাতে ঋণ দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছিল। সুদ-আসলসহ ৪৮ কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। এরপর বিভিন্ন সময় বেতন বাড়ানো হলেও গৃহনির্মাণ খাতে ঋণ সুবিধা বাড়ানো হয়নি। যদিও ঋণসীমা আরো বাড়ানোর দাবি করে আসছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। সরকার এ খাতের সুদহার বাজারভিত্তিক করতে চায়। এ প্রেক্ষিতে গৃহনির্মাণ ঋণ সুবিধা নীতিমালা সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে একটি কমিটিও গঠন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। কমিটির দেওয়া সুপারিশ বা প্রস্তাব পর্যালোচনার জন্য আজকে বৈঠকে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এরপর প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে ২১ লাখ সরকারি চাকরিজীবী রয়েছেন। এর মধ্যে স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক রয়েছেন সাত লাখ।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১