আপডেট : ১৮ February ২০১৮
এর আগেও অনেক পদক জিতেছেন। কিন্তু এবার পদক জেতার আনন্দটাই আলাদা। ইংল্যান্ডপ্রবাসী বক্সার আল সাফওয়ান উদ্দিনের স্বপ্নপূরণের সিঁড়িতে ওঠার প্রথম ধাপটা ছিল জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। সেই পরীক্ষায় পাস। পল্টন মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে কাল ৬০ কেজি ওজন শ্রেণিতে সোনা জিতেছেন সাফওয়ান। ফাইনালে সাফওয়ান হারিয়েছেন আনসারের রাকিব শেখকে। এবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে তিনজন বক্সারের সঙ্গে লড়েছেন সাফওয়ান। প্রথম দিনে দিনাজপুরের তরুণ কামরুজ্জামান জনিকে হারাতে বেগ পেতে হয়নি লন্ডনের জল-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা সাফওয়ানকে। জনিকে নকআউটে রক্তাক্ত করেছিলেন সেদিন। কিন্তু পরের দুজনকে হারাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। পরশু সেমিফাইনালে সেনাবাহিনীর ফয়সাল মোল্লাকে হারিয়েছেন তিন রাউন্ড কঠিন লড়াই করে। কালও রাকিবের বিপক্ষে তিন রাউন্ড খেলে তবেই সোনার পদক গলায় তুলেছেন। বিদেশি কোচের অধীনে অনুশীলন করেছেন। সুযোগ-সুবিধাতেও দেশি বক্সারদের চেয়ে এগিয়ে সাফওয়ান। কিন্তু তারপরও জয়টা সহজে আসেনি, ‘আসলে ইংল্যান্ডের বক্সাররা বেশি টেকনিক্যাল। কিন্তু এখানকার বক্সার বেশি আক্রমণাত্মক। তাই এখানেও জেতাটা সহজ ছিল না। কখনো প্রতিপক্ষ রিংয়ে পড়ে গেছে। কিন্তু আবারও উঠে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছে। তবে আমি শুধু সঠিক কৌশলে খেলে জিতেছি।’ পদকটা যেন বড় স্বস্তি এনে দিয়েছে সাফওয়ানকে। কাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ১৮ বছরের তরুণের চোখে ছিল রোমাঞ্চ, কণ্ঠে ছিল উচ্ছ্বাস, ‘মনে হচ্ছে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। কারণ এখানে খেলব বলে ইংল্যান্ডে আলাদা করে অনুশীলন করেছি। এই একটা মুহূর্তের জন্য এত দিন প্রস্তুতি নিয়েছি। আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত। আমার পরিবার, বাবা-মা সবাই খুব খুশি।’ সাফওয়ানের তিনটি লড়াই স্টেডিয়ামে বসে দেখেছেন বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক পদকজয়ী বক্সার ও জাতীয় কোচ আবদুল হালিম। ১৯৭৭ সালের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জজয়ী বক্সারের মুখেও সাফওয়ানের প্রশংসা, ‘ওর একটা বিষয় ভালো লেগেছে, কখনো মনোবল হারায়নি। ছেলেটা মানুষকে দেখানোর জন্য ডজ দেয়। অনেকটা পেশাদার বক্সারদের মতো। ওর মুভমেন্টগুলো খুব অসাধারণ। কিন্তু ওকে আরও ফাস্ট হতে হবে।’ সাফওয়ানের একমাত্র স্বপ্ন দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পদক জেতা। কিন্তু আগামী এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সুযোগ নেই সাফওয়ানের। ফেডারেশন বক্সিং দলের তালিকা ডিসেম্বরেই পাঠিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে (বিওএ)। কিন্তু এশিয়ান গেমসে তাঁকে দলে ঢোকানোর জোর প্রস্তুতি চলছে। যদিও আগস্টে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়াডে বক্সিং বাদ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত আগেই নিয়ে রেখেছে বিওএ। তবে যত দূর জানা গেছে, শুধু সাফওয়ানের জন্যই এশিয়াডে দল পাঠাতে পারে বক্সিং। এ ছাড়া জুনে ব্যাংককের কিংস কাপেও খেলার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। কাল খেলা শেষে সাফওয়ান ও তাঁর বাবা জবলু উদ্দিনকে নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে এসব বিষয়ে আলোচনা করেছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস। বিওএর উপমহাসচিব আশিকুর রহমান মিকুর উপস্থিতিতেই হয়েছে আলোচনা। বিওএর কর্মকর্তাও কাল তেমন আভাস দিলেন, ‘দেশের জন্য যদি ভালো হয় তাহলে আমরা এশিয়াডে খেলাতে পারি ওকে। তা ছাড়া কমনওয়েলথ গেমসে সুযোগ আছে কি না, সেটাও জানার চেষ্টা করব।’
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১