ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন সংগঠন ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’

ছবি সংগৃহীত

জাতীয়

‘সম্প্রীতি বাংলাদেশের’ আত্মপ্রকাশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৭ জুলাই, ২০১৮

‘গাহি সাম্যের গান’ শ্লোগান নিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ, শোষণহীন ও সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন সংগঠন ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’। আজ শনিবার জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে সংগঠনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, সাংবাদিক আবেদ খান, ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো. আফজাল, বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা শুদ্ধানন্দ মহাথেরো, রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী গুরুসবানন্দ, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, ইসকনের প্রতিনিধি সুখীল দাস, সংগঠনের সদস্য সচিব মামুন আল মাহতাব বক্তৃতা করেন।

এই নাগরিক ফোরামের উদ্দেশ্য তুলে ধরে আহ্বায়ক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের যেই প্রধান চেতনা ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’, সেটার দিকে আমরা ফিরে যেতে চাই।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আঘাত আসতে পারে, আমরা আগে থেকে প্রস্তুত থাকতে চাই। আমরা জানি, এই দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠী সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ও সাম্যের পক্ষে। আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আপনাদের সঙ্গে পেলে আমরা জয়ী হব।’

আনিসুজ্জামান বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সামনে আনা হয়েছে। তার ফলে আমরা দেখি, ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ ও ‘৭২ এর সংবিধানের যে আদর্শ সেটা সাময়িকভাবে হলেও ভুলুণ্ঠিত হয়েছে। তারপরে মানুষ আবার এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ফিরিয়ে এনেছে।’ আমরা সেজন্য সবার কাছে আহ্বান জানাই, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেটা আমরা ইতিহাস থেকে পেয়েছি, যা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ থেকে পেয়েছি, যা আমাদের সংবিধান থেকে পেয়েছি, তা যেন ঊর্ধ্বে তুলে ধরে সামনের দিকে অগ্রসর হই।’

বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা শুদ্ধানন্দ মহাথেরো বলেন, ‘আমরা বাঙালি। বাঙালিরা যদি মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান মিলে একসাথে কাজ করতে পারি তাহলে সম্প্রীতি বজায় থাকবে। কারণ, আমরাতো এক ভাষায় কথা বলি। সাম্প্রায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে পারলে বাঙালিত্বও ফিরে আসবে।’

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো. আফজাল বলেন, ‘মদিনা সনদ সব ধর্মের সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত আর তার প্রতিফলন ঘটেছে বাহাত্তরের সংবিধানে। সব ধর্মের মানুষের অধিকার সেখানে সমুন্নত রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, অথচ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা আবুল আলা মওদুদী, মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড, তুরস্কের ফতেহ গুল ও জাকির নায়েকরা ইসলামের ‘ভুল ব্যাখ্যা’ দিয়েছে ও দিচ্ছে।

রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী গুরু সেবানন্দ বলেন, “ধর্মের বিভাজন নয়, ধর্মের সহাবস্থানের কথাই তুলে ধরা হয়েছে সব ধর্মে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরাও সে মতো তাদের জীবন পরিচালনা করতে চায়। সবার মধ্যে সম্প্রীতি বজায় থাকুক।’

জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে সূচনা হওয়া অনুষ্ঠানে অতিথিদের পাশাপাশি শিক্ষার্থী, ধর্মীয় সংগঠনের কর্মী ও সংস্কৃতিকর্মীদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ ছিল জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads