মাহমুদ হাসান লিটন, লালমোহন (ভোলা)
ভোলা জেলায় বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করেছে ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’ ডিজিটাল পার্ক। লালমোহন পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সরকারি শাহাবাজপুর কলেজ মাঠে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৩ একর জমির ওপর এ পার্কটি স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ‘লালমোহন সজীব ওয়াজেদ জয় পৌর ডিজিটাল পার্কে’র উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলের নামে পার্কটিতে দেশের সবচেয়ে বড় এলইডি টিভি, ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা, রেলগাড়ি, নাগরদোলাসহ ২৬টি রাইডস রয়েছে। প্রযুক্তিনির্ভর দৃষ্টিনন্দন ডিজিটাল পার্কটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় করে। প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত পার্কটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য (লালমোহন-তজুমদ্দিন) নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন জানান, বাংলাদেশের মধ্যে ফ্রি ওয়াইফাই সমৃদ্ধ প্রথম ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’ ডিজিটাল পার্ক নির্মাণ করা হলো। এখানে দেশের সবচেয়ে বড় ২০ ফুট বাই ৩০ ফুট এলইডি টিভি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে শুধু লালমোহন নয়, সমগ্র জেলার বিনোদনের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আবার জেলার বাইরে থেকেও অনেক বিনোদনপ্রেমী ভিড় করেন এ পার্কে। বর্তমানে পার্কে থ্রিজি ইন্টারনেট চালু থাকলেও অচিরেই তা আরো বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি। লালমোহন পৌর মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন জানান, বিগত দিনে এখানে বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এখানকার বাসিন্দারা জেলা সদর বা অন্য উপজেলায় যেত বেড়ানোর জন্য। তবে নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের উদ্যোগে পৌরসভা ও জেলা পরিষদ যৌথভাবে পার্কটি নির্মাণ করেছে। বিশেষ করে ফ্রি ইন্টারনেট অনেককেই আগ্রহী করে তোলে সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল পার্কে বেড়াতে। এ ছাড়া দেশের সর্ববৃহৎ এলইডি টিভিতে মুভি, খবরসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।
কলেজছাত্রী ফারহানা সুলতানা ও সাদিয়া বৃষ্টি বলেন, সব সময় ইন্টারনেট কিনে ব্যবহার করা যায় না। তাই সম্পূর্ণ ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা ভোগ করতেই পার্কে আসা। এতে করে সহজেই প্রযুক্তির মাধ্যমে সারা বিশ্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া যায়। জানা যায় বিশ্বের কোথায় কী ঘটছে। রিয়াজ রহমান, জয় দত্ত, আরিফ সাকিল ও সুমন হোসেন বলেন, এত বড় এলইডি টিভিতে ছবি দেখার মজাই আলাদা। তাই তারা বন্ধুরা মিলে বিকালে পার্কে আসেন।
স্থানীয় ব্যাংক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই শহরে বিগত দিনে হাঁটা বা অনুশীলনের কোনো নির্দিষ্ট স্থান ছিল না। পার্কটি হওয়ায় ইচ্ছামতো শরীরচর্চা করা যায়। একইসঙ্গে পারিবারিক পরিবেশেও ভ্রমণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ছুটির দিনে শত শত দর্শনার্থীর পদচারণায় পার্কটি মুখর হয়ে ওঠে। সন্ধ্যার পর লাল-নীল-সবুজ নানান রকম বাহারি রঙের এক অভিনব তরঙ্গে মেতে ওঠে পার্কের প্রতিটি স্থান। বিশেষ করে ফোয়ারা থেকে ছড়ানো রঙিন আলো পুরো পার্কটিকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলে। পার্কে বিরাজ করে মায়াবী রূপ। পার্কের মুক্ত বাতাস ও বাহারি আলো দর্শনার্থীদের হূদয়ে দোলা দেয়।