ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রবল জোয়ারের পানির আঘাতে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ কক্সবাজার টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেটিটি বিধ্বস্ত হয়েছে। যে জেটি দিয়ে পর্যটকসহ দ্বীপের বাসিন্দারা যাতায়াত করতেন। এছাড়াও উপড়ে পড়েছে গাছপালা। তবে মানুষের জানমাল রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ বসবাস করে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে আতংকে আছে দ্বীপের বাসিন্দারা।
সেন্টমাটিনের বাসিন্দা কেফায়েত উল্লাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আতংকে দ্বীপের মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।
আজ বুধবার সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি বয়ে যাচ্ছে। তার চেয়ে বেশি আঘাত হানছে প্রবল জোয়ারের পানি। জোয়ারের পানিতে দ্বীপের আশেপাশে পাড়ের গাছপালা উপড়ে যাচ্ছে। এছাড়াও ভাঙছে রাস্তাঘাট। দ্বীপবাসী এখনো আতঙ্কে রয়েছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের আরেক বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, দ্বীপের একমাত্র জেটিটি সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙে গেছে। রাস্তাঘাট ও গাছপালাও ভেঙে পড়ছে। দ্বীপে জোয়ারের পানি ঢুকে গেছে।
এ ব্যাপারে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, সেন্টমাটিন দ্বীপের লোকজনক সরিয়ে নেওয়ার মত পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। যদি সংকেত ৪ নম্বর দেয়, তখন মাইকিং করে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দ্বীপের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকের অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু গাছপালা উপড়ে গেছে। রাস্তাঘাট ভাঙছে। আর প্রবল জোয়ারের পানিতে বালিয়াড়িতে থাকা পাঁচটি ট্রলার ভেঙে গেছে। এছাড়াও প্রবল জোয়ারের পানিতে জেটিটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
এবিষয়ে কোস্টগার্ড সেন্টমার্টিন স্টেশনের ইনচার্জ লে. কমান্ডার রাসেল মিয়া বলেন, সেন্টমাটিন দ্বীপে স্থানীয় মানুষের বসবাস রয়েছে ১০ হাজার ২৬ জন। দ্বীপের হোটেল, রিসোর্ট, স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ মিলে ৩০টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। যেখানে ছয় হাজার মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রবল জোয়ারের পানিতে সেন্টমাটিনের একমাত্র জেটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব ধরণের ট্রলার চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আর ছোট ট্রলার, নৌকা ও স্পিডবোটসমূহ দ্বীপের উপকূলে নোঙর করে রাখা হয়েছে। আশা করি সবার সমন্বয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।