৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যা দিবস ছিল বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে ৯৮ হাজার মিথ্যা মামলায় ২৬ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে, কেউ বাদ পড়েনি। তাই দেশকে বাঁচাতে, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে জেগে উঠতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে জানে। আমাদের সংবিধান ও অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমানের সভাপতিত্বে জেলা বিএনপি আয়োজিত মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে নির্বাচন পরবর্তী দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন ফখরুল।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পরাজয় হয়নি বলে মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই নির্বাচনে বিএনপি পরাজিত হয়নি, পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার, পরাজিত হয়েছে মানুষের সমস্ত সুস্থ ভাবনা-চিন্তার। আমাদের ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই চেতনার পরাজয় হয়েছে। আমাদের সমস্ত মূল্যবোধগুলো রাতের অন্ধকারে ডাকাত এসে কেড়ে নিয়ে গেছে। সমস্ত চিন্তা-ভাবনাকে কেড়ে নেয়া হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সংবিধানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে, বাংলাদেশের যে গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ ছিল সেটাকে তারা নষ্ট করে দিয়েছে।’
‘২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল’ দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে জানে। তারা বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলে যে কথা আমরা বলেছি এই নির্বাচনের মাধ্যমে তা প্রমাণ হয়েছে। আমরা ২০১৪ সালে যে নির্বাচন বর্জন করেছিলাম তা ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত।’
তিনি আরও বলেন, ৩০ ডিসেম্বর কোনো ভোট হয়নি, নির্বাচন হয়নি। জনগণের কাছে, প্রজন্মের কাছে, এদেশের মানুষের কাছে আওয়ামী লীগকে এরজন্য জবাবদিহি করতে হবে। কোন অধিকারে তারা মানুষের সম্পদ ধ্বংস করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশে আর কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তারা জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, জনগণের মতামতকে তারা প্রাধান্য দেয় না। যারা ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র লুট করেছে, মা-বোনের ইজ্জত কেড়ে নিয়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘর ছাড়া করেছে তাদের ক্ষমা করা করা যাবে না।’
এসময় ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আবারও নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি সুলতানুল ফেরদৌস চৌধুরী প্রমুখ।