২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭২২১ জন : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

প্রতীকী ছবি

জাতীয়

২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭২২১ জন : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯

২০১৮ সালে দেশে ৫ হাজার ৫১৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭ হাজার ২২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪৬৬ জন। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য তুলে ধরে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।

সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এসব পরিসংখ্যান দিয়ে দুর্ঘটনার কারণ ও সুপারিশমালাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদের আলোকে সমিতির প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে রেলপথে ৩৭০টি দুর্ঘটনায় ৩৯৪ জন নিহত ও ২৪৮ জন আহত হয়েছেন। আর নৌপথে ১৫০টি দুর্ঘটনায় ১২৬ জন নিহত ও ২৩৪ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ৩৮৭ জন। আকাশপথে পাঁচটি দুর্ঘটনায় গতবছর ৫৫ জন নিহত ও ৩২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে নেপালে ইউএস বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাও যুক্ত করা হয়েছে।

২০১৮ সালে সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশ পথ মিলিয়ে মোট ৬ হাজার ৪৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে গতবছর। এসব ঘটনায় ৭ হাজার ৭৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯৮০ জন।

লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক বলেন, “বিদায়ী বছরের ৩ এপ্রিল সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনায় রাজীবের বিচ্ছিন্ন হাত দুই বাসের মাঝে আটকে থাকার ছবি দেশের মানুষের হৃদয় কাঁদিয়েছে। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রাস্তা পার হতে গিয়ে গৃহকর্মী রোজিনা গত ২০ এপ্রিল প্রথমে পা হারায়, পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায়।

তিনি বলেন, গত ২৯ জুলাই হোটেল র‍্যাডিসনের সামনে শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী জাবালে নূর পরিবহনের বাস চাপায় নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশের প্রতিটি স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। দেশব্যাপী নিরাপদ সড়কের আন্দোলন গড়ে ওঠে।”

সমিতির মহাসচিব বলেন, “গত ২৭ অগাস্ট চট্টগ্রামের সিটি গেইট এলাকায় বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে বিতর্কের জেরে রেজাউল করিম রনি নামে এক যাত্রীকে বাস থেকে ফেলে হত্যা করা হয়। ২৮ অগাস্ট রাস্তা পার হাওয়ার সময় কুষ্টিয়ায় বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে পরে শিশু আকিফা নিহত হয়।”

সমিতির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপদজনক ওভারটেকিং, সড়ক-মহাসড়ক ও রাস্তা-ঘাটের নির্মাণ ক্রটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, মহাসড়ক ও রেলক্রসিংয়ে ফিডার রোডের যানবাহন উঠে পরা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, যানবাহনে অতি পণ্য বা যাত্রী বহন এবং সড়কে ছোট যানবাহনের সংখ্যা বাড়ায় দুর্ঘটনা বাড়ছে।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশও তুলে ধরেছে সংগঠনটি।  এর মধ্যে রয়েছে, ট্রাফিক আইন, মোটরযান আইন ও সড়ক ব্যবহার বিধিবিধান সম্পর্কে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে। একইসঙ্গে টিভি-অনলাইন, সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়ক সচেতনতামূলক বা দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা, জেব্রাক্রসিং দেওয়া, চালকদের পেশাগত প্রশিক্ষণ ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা, যাত্রীবান্ধব সড়ক পরিবহন আইন ও বিধিবিধান প্রণয়ন, গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার পদ্ধতিগত উন্নয়ন-আধুনিকায়ন, জাতীয় মহাসড়কে কমগতি ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা এবং লাইসেন্স নবায়নের সময় চালকদের জন্য ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করার কথা এসেছে তাদের সুপারিশে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads