চোরাই মোবাইল ফোনের আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি) নম্বর পরিবর্তন করে অপরাধীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। যেকোনো মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর মাত্র ১০ মিনিটে বদলে ফেলতে সক্ষম রাজধানীতে গড়ে ওঠা চক্রটি। এই চক্রের ১৫ সদস্যকে বিপুল সংখ্যক চোরাই মোবাইল ও আইএমইআই পরিবর্তনের সরঞ্জামাদিসহ গত সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৩-এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসান। তিনি বলেন, রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় সংঘবদ্ধ চক্র বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করে মাত্র ১০ মিনিটে মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করছে। এ ধরনের গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে আমরা গুলিস্তানের ‘পাতাল মোবাইল মার্কেটে’ অভিযান পরিচালনা করে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনকালে মাসুদ লাকুরিয়া (১৮) নামে প্রতারকচক্রের এক সদস্যকে আটক করি। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে সহযোগীদের নাম পেয়ে গুলিস্তানের মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম মার্কেটে অভিযানে যায় র্যাব-৩-এর আরেকটি দল। অভিযানে বিভিন্ন দোকান থেকে চোরাই ও ছিনতাই করা ৫৩১টি বিভিন্ন মডেল ও ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন জব্দ এবং ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মাসুদ লাকুরিয়া (১৮), রিপন (৩৭), পলক (১৯), কামাল হোসেন (২৭), রাশেদুল ইসলাম (২১), নাঈম সরদার (১৮), রাশেদ খান (২৪), জাহিদুল ইসলাম (২১), মোতালেব (২৬), রানা হামিদ (২২), আনিস মোল্লা (২৮), স্বপন (২৬), আবদুল মান্নান (৩৯), মো. মাসুদ রানা (২৪) ও মো. নাজিম (২৬)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সম্প্রতি এক দাগি অপরাধীর মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে জানা যায়, একই আইএমইআই নম্বর ব্যবহূত হচ্ছে একাধিক মোবাইলে। এরপর তদন্তে নামে র্যাব। প্রায় বছরখানেক চেষ্টা চালিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্রকে ধরতে সক্ষম হন র্যাব-৩-এর সদস্যরা।
এক প্রশ্নের জবাবে লে. কর্নেল এমরানুল হাসান বলেন, খুনি, ডাকাতসহ অপরাধজগতে এসব মোবাইলের চাহিদা বেশি। অপরাধীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতেই এসব মোবাইল ব্যবহার করে থাকে। চাহিদার কারণে তারা বেশি দাম দিয়ে এসব সংগ্রহ করে।
তিনি আরো বলেন, এসব চোরাই ও ছিনতাই করা মোবাইল ফোন ২ থেকে ৫ হাজার টাকায় কিনে মোবাইল ফোনের কভার, আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে।
জঙ্গিরা এসব মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এমন কোনো তথ্য আপনারা পেয়েছেন কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করতে পারে। তবে এ বিষয়টিও আমরা তদন্তের আওতায় এনেছি। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা তাদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করব।