শুরুটা করলেন আলেক্স হেলস। শেষটা রিলে রুশো। কী দারুণ মনমুগ্ধকর ইনিংস। বলটাকে মুহুর্মুহ আছড়ে ফেললেন গ্যালারিতে। কখনো মাটি কামড়ে ক্ষিপ্রগতিতে বলের বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ। দুজনই পেলেন সেঞ্চুরি। দুজনের রানই সমান, ১০০। হেলস আউট, রুশো অপরাজিত। দুজনের ঝড়ো ইনিংসে রংপুরের স্কোর দাঁড়ালো ৪ উইকেটে ২৩৯। তাতে রেকর্ড হলো ওলটপালট। বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের স্কোর এটি। এমন ম্যাচে রংপুর হেরে যায় কী করে? তেমন কিছু হয়ওনি। রেকর্ড গড়া এই ম্যাচে গতকাল চিটাগং ভাইকিংসকে ৭২ রানে পরাজিত করে নতুন ইতিহাসই সৃষ্টি করেছে মাশরাফির রংপুর রাইডার্স।
হলো বিপিএলে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। আগেরটি ছিল ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের। ২০১৩ সালে দলটি করেছিল ২১৭ রান, ৪ উইকেটে। প্রতিপক্ষ ছিল রংপুর রাইডার্স। সেই রংপুর এবার নিজেরাই গড়ল নতুন রেকর্ড। আরো একটি রেকর্ডও আছে। তা হলো বিপিএল প্রথমবারের মতো দেখল এক ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি। ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে যা তৃতীয়। এমন ঘটনা এর আগে একবার করে দেখা গেছে আইপিএল (ভিলিয়ার্স-কোহলি) ও ফ্রেন্ডস লাইফ টি-টোয়েন্টিতে (কেভিন ও ব্রায়েন-হামিশ মার্শাল)।
টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চিটাগং ভাইকিংস অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। কিন্তু তার সিদ্ধান্তকে হতাশায় পর্যবসিত করেন হেলস ও রুশো। ব্যাট করতে নেমে রংপুরের শুরুটা যদিও ম্যাড়মেড়ে। দাঁড়াতে পারেননি ক্রিস গেইল (২)। দলীয় ৬ রানের মাথায় তিনি জায়েদের বলে এলবিডব্লিউ। কিন্তু এর পর থেকেই যেন পাল্টে যায় রংপুরের চেহারা। ব্যাট হাতে চিটাগংয়ের বোলারদের কচু কাটা করেন আলেক্স হেলস। সময় বাড়ার সঙ্গে সেই মিশনে যোগ দেন চলমান টুর্নামেন্টে সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান রিলে রুশো। দুজনের জুটি থেকে আসে ১৭৪ রান। ৪৮ বলে বরাবর ১০০ রান করে ফেরেন হেলস। টর্নেডো ইনিংসে ছিল ১১টি চার ও পাঁচটি ছক্কার মার।
রুশো তখন জুটি বাঁধেন আরেক ভয়ংকর ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে। তবে এদিন নিষ্প্রভ ভিলিয়ার্স। মাত্র এক রান করে ফেরেন জায়েদের বলে সীমানার কাছে খালেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে। তাই বলে রানের চাকা থেমে থাকেনি রংপুরের। এক রুশোই তখনো মূর্তিমান আতঙ্ক। ৫১ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করে থাকেন অপরাজিত। আট চারের বিপরীতে তিনি ছক্কা মেরেছেন ৬টি। নাহিদুল ৪ বলে ১১ রানে অপরাজিত। মিঠুন করেন ১৫। রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ২৩৯ রান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মেরে খেলার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিল চিটাগংয়ের ব্যাটসম্যানরা। তবে একমাত্র ইয়াসির আলী ছাড়া কেউই খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। ৪৮ বলে সর্বোচ্চ ৭৮ রান করেন ইয়াসির আলী। ধড়াম ধড়াম করে কয়েকটি ছক্কা হাঁকানো অধিনায়ক মুশফিক করেন ১১ বলে ২২। ১২ বলে ২০ করেন ওপেনার শাহজাদ। মোসাদ্দেকের ব্যাটে আসে ১৩ বলে ১৪ রান। নির্ধারিত ২০ ওভারে চিটাগং করতে পারে ৮ উইকেটে ১৬৭ রান।
নয় ম্যাচে রংপুরের এটি পঞ্চম জয়, পয়েন্ট ১০। আট ম্যাচে চিটাগংয়ের এটি দ্বিতীয় হার। ছয় জয়ে দলটির পয়েন্ট ১২। এখনো শীর্ষে চিটাগংই।