চার সদস্যের পরিবারের মধ্যে সবার ছোট শানজিদা শারলিন। তেজগাঁওয়ের সরকারি কোয়ার্টারে বেড়ে ওঠা। বাবার চাকরির সুবাদে অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছেন সরকারি কোয়ার্টারে। তিনি বিশ্বাস করেন তার কাজের মূলমন্ত্র পরিবার। তিনি বলেন, পরিবারের সবার সহযোগিতা নয়, বরং পরিবারের প্রত্যেকে মিলেই একসঙ্গে কাজগুলো করি। সেজন্য চাপহীনভাবে লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ করতে পারছেন বলে তিনি মনে করেন।
কাজের প্রতি ভালোবাসা আর মনের তাগিদ থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নের শুরু শানজিদা শারলিনের। ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন হাতের কাজ করে ঘর সাজিয়ে রাখার শখ ছিল তার। স্নাতকে পড়ার সময় থেকে পরিচিত হন উদ্যোক্তা শব্দের সাথে। পরিবার ও কাছের কিছু মানুষের অনুপ্রেরণায় তার উদ্যোগের ফেসবুক পেজ খুলে অনলাইন বিজনেসে পথচলা বলে তিনি জানান।
কতটুকু পারবে কিংবা কীভাবে কী করবে—সেসব নিয়ে শুরুতে কিছুটা ভয় কাজ করলেও ধৈর্য আর বিশ্বাসের কারণে স্বপ্নশখ ও স্বাদ বাহারি দুটি ফেসবুক পেজেই সফলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন তিনি। পেজ খোলার তিন মাসের মধ্যে প্রথম বিক্রি শুরু হলেও হতাশায় উদ্যোগের পথ না ছেড়ে ধৈর্য ধরে চালিয়ে গেছেন বলে তিনি জানান।
করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত সরকারি শিশু পরিবার বালিকায় পার্ট টাইম ট্রেইনার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। করোনাভাইরাসের হানায় সেখানে যাওয়া বন্ধ করে দেন। নিজের হাতের কাজকে উপজীব্য করে ২০২০ সালের আগস্টে প্রথম পেজ স্বপ্নশখ ও অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে স্বাদ বাহারি নামে আরো একটি পেজের মাধ্যমে উদ্যোক্তা পথচলা বেগবান করে তোলেন।
৬০০ টাকা দিয়ে শুরু করা উদ্যোগে বর্তমানে যুক্ত হয়েছে ফ্রোজেন ফুড, হ্যান্ডমেইড গয়না, পাটপণ্য, ঘর সাজানোর বিভিন্ন উপকরণ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চর্চার বিভিন্ন উপকরণ।
নারীদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ পরিবার ও সমাজ বলে তিনি মনে করেন। কিন্তু পরিবারকে সবসময় পাশে পেয়েছেন বলে অধিকাংশ সমস্যাই সমাধান হয়ে গেছে বলে তিনি জানান। একটি সফল প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
শানজিদা শারলিন স্বপ্নশখ পেজের মাধ্যমে পাটপণ্য, ঘর সাজানোর বিভিন্ন উপকরণ, গায়ে হলুদের গয়না, কাঠ ও মেটালের হ্যান্ডমেইড গয়না ও শো পিস নিয়ে কাজ করছেন। অন্যদিকে স্বাদ বাহারি পেজের মাধ্যমে হোমমেইড ফ্রোজেন রুটি, শিঙাড়া, সমুচাসহ বিভিন্ন ফ্রোজেন ফুড, আচার, পাউন্ড কেক ও প্রাকৃতিক প্রসাধনী নিয়ে কাজ করছেন।
হাতের কাজ তার স্বপ্ন। তিনি মনে করেন, চারপাশে যদি সুন্দর কোনো শো পিস বা হাতের কাজের কোনো জিনিস থাকে তাহলে মনমেজাজ ফুরফুরে ও ভালো থাকে বলে এমন পণ্য নিয়ে উদ্যোগ শুরু করেছেন তিনি।
ফেসবুক পেজ ছাড়াও রাজধানীর আগারগাঁওয়ের তালতলার কল্লোল কমপ্লেক্স তার শপ থেকে পণ্য পাওয়া যাবে।