রাশিয়ায় নিযুক্ত প্রাক্তন ব্রিটিশ চর সের্গেই স্ক্রিপাল এবং তার মেয়ে ইউলিয়ার উপর রাসায়নিক হামলায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে পারার দাবি করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। এই ঘটনায় প্রথম থেকেই রুশ সরকারের দিকে আঙুল তুলে এসেছে ব্রিটেন। ব্রিটিশ পুলিশও এবার জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তারা এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে, স্ক্রিপাল আর তার মেয়েকে ‘নভিচক’ রাসায়নিক দিয়ে মারার পরিকল্পনা করেছিল এক দল রুশ। গোটা ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করেছে বলেও দাবি করেছে পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে কোনো নাম বা কারো পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
ব্রিটেনের স্যালিসবেরিতে ৪ মার্চ একটি শপিং মলের সামনের এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সের্গেই (৬৬) আর তার মেয়ে ইউলিয়াকে (৩৩)। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা চলার পরে এপ্রিলে ছাড়া পান ইউলিয়া। মে মাসে বাড়ি ফেরেন সের্গেইও। কিন্তু তাদের এখন কোথায় রাখা হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খোলেনি পুলিশ। মাস তিনেক পরে, ৩০ জুন একইভাবে অচেতন অবস্থায় ব্রিটেনের এমসবেরির একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় এক যুগলকে। ডন স্টারগেস এবং তার সঙ্গী চার্লি রাওলিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুদিন পরে মৃত্যু হয় ৪৪ বছরের ডনের। চার্লির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ জানিয়েছে, যে বাড়ি থেকে ডনদের উদ্ধার করা হয়, সেখানকার একটি বোতল থেকে রাসায়নিক তরল প্ওয়া গেছে। সেটি কীভাবে তাদের কাছে এল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে ওই রাসায়নিক থেকেই যে ডনদের শরীরে বিষ ঢুকেছিল, তা নিয়ে নিশ্চিত পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, স্ক্রিপালদের স্যালিসবেরির বাড়ির কাছে যাতায়াত ছিল ডনদের। স্ক্রিপালদের বাড়ি আগেই সিল করে দেওয়া হয়েছিল, পরে ডনদের এমসবেরির বাড়িটিও সিল করে পুলিশ। তবে স্ক্রিপালদের কায়দায় ডন ও তার সঙ্গীকেও কেন মারার চেষ্টা হয়েছিল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। যদিও দু’টি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
স্ক্রিপালকাণ্ডে রুশ যোগ নিয়ে অবশ্য আজ মুখ খুলতে চাননি ব্রিটেনে রাশিয়ার দূত আলেকজ়ান্ডার ইয়াকোভেঙ্কো। তার বক্তব্য, ‘এ নিয়ে ব্রিটিশ সরকার সরকারিভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। এক একটা কাগজে এক এক রকমের খবর বেরোচ্ছে। কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল তা যাচাই করা এভাবে সম্ভব নয়। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড বা বিদেশ মন্ত্রণালয়েরর কাছ থেকে আমি পুরোটা শুনতে চাই।’