স্কুলমাঠে হাট : কলাপাড়ায় দুটি স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ফিচার

স্কুলমাঠে হাট : কলাপাড়ায় দুটি স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

  • মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
  • প্রকাশিত ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

 

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার টিয়াখালী কে আই ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সংলগ্ন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বসছে সাপ্তাহিক হাট। ঘড়ির কাঁটায় দুপুর ১টা বাজার আগেই ছুটি দিতে হচ্ছে স্কুল দুটি। দেড় বছর ধরে দুটি বিদ্যালয় মাঠে হাট বসে প্রতি বৃহস্পতিবার। এই হাট বসার কারণে বিদ্যালয় দুটির শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলমাঠের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিয়াখালী কে আই ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সংলগ্ন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি ছুটি হয়ে গেছে ১টার মধ্যেই। মাঠে কাঁচা তরিতরকারি বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি এই হাটে পশুর হাটও বসে। বিক্রি করা হয় গরু-ছাগল। তাই বিক্রেতাদের সুবিধার্থে দুটি বিদ্যালয়ই দুপুর ১টার মধ্যেই স্কুল ছুটি দিতে হচ্ছে।

হাটে কাঁচা মালামাল বিক্রি করতে আসা ফারুক হাওলাদার জানান, ১২টার দিকে মালামাল নিয়ে তারা হাটে এসেছেন। বাজার শুরু হয় ২টার পরে। মূলত তখন বাজার জমজমাট হয়। আরেক ব্যবসায়ী আবদুল কুদ্দুস জানান, দেড় বছর ধরে এই হাটে সব ধরনের মালামাল বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন তারা। টিয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ এ হাটের ক্রেতা। হাটে পাকা ঘর না থাকায় বর্ষা মৌসুমে তারা স্কুলের বারান্দায় বসে বিক্রি করেন মালামাল। 

বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী মিজানুর রহমান বলেন, তিনটি বিষয়ে ক্লাস শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার মধ্যে স্কুল ছুটি দিতে হয়। গ্রামবাসীর সুবিধার্থে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিচ্ছেন বলে জানান তিনি। তবে মাঝে মাঝে বাজারে লোকের উপস্থিতি বেশি হলে আরো আগে ছুটি দিতে হয়।

টিয়াখালী কে আই ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শওকত হোসেন সেলিম বলেন, মূল হাটটি নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। গ্রামের মানুষের সুবিধার্থে স্থানীয়রা স্কুলমাঠে এই হাট বসিয়েছেন। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি হলেও গ্রামবাসীর কথা চিন্তা-ভাবনা করেই তারা হাটের দিন একটু আগেই স্কুল ছুটি দেন। তবে বর্ষা মৌসুমে দোকানদাররা মালামাল বিক্রির জন্য বসে পড়েন স্কুলের বারান্দায়। তখন সমস্যা হয়।

দুটি বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, স্কুলমাঠে হাট বসার কারণে মাঠজুড়ে গরু-ছাগলের আবর্জনা ও ময়লার স্তূপ জমে থাকে। এ কারণে শনিবার স্কুলে এসে তাদের বিপাকে পড়তে হয়। বাধ্য হয়ে নিজ উদ্যোগে তাদের স্কুল পরিষ্কার করতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, স্কুলমাঠে হাট বসায় তাদের কেনাকাটায় সুবিধা হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে হাট বসানো ঠিক নয়। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি হয়। হাটের ময়লা-আবর্জনার কারণে রোগব্যাধি হতে পারে। এ হাটটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া উচিত।

কলাপাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের টিয়াখালী ইউনিয়নের এটিও রফিকুল ইসলাম আরিফ জানান, টিয়াখালী কে আই ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি বেসরকারি স্কুল হওয়ায় তার যাওয়া হয়নি। তবে স্কুলমাঠে সাপ্তাহিক হাট বসানো ঠিক নয়। বিষয়টি জেনে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান তিনি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলাপাড়ায় বদলি হয়ে এলেও গত নয় মাসে টিয়াখালী কে আই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভিজিট করেননি তিনি।

কলাপাড়া উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মনিরুজ্জামান খান জানান, স্কুলমাঠে হাট বসার বিষয়টি অবগত নন। স্কুলমাঠের হাটটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads