রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে থানার শৌচাগারে সন্তান প্রসবকারী ভারতীয় নাগরিক রোখসানা আক্তারের স্বামী বাংলাদেশি আবদুল হককে আটক করেছে রেলওয়ে থানা পুলিশ। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
রেলওয়ে পুলিশ থানার ওসি ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, আবদুলকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরে আদালতে পাঠানো হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্তঃসত্ত্ব্বা স্ত্রীকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ফেলে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন আবদুল।
ওসি জানান, দেড় বছর আগে ভারতে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আবদুল ও রোখসানার। ক্যানসারে আক্রান্ত মাকে দেখার কথা বলে আবদুল স্ত্রীকে নিয়ে গত ২ জুন বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে দেশে আসেন।
পুলিশ জানায়, রোখসানার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আজিমপুর কবরস্থান থেকে ননদের স্বামী সোলেমানের খোঁজ পাওয়া যায়। পরে তার মাধ্যমে রোখসানার স্বামীকে আটক করা হয়।
গত সোমবার রাতে ঢাকার কমলাপুরে রেলওয়ে থানার শৌচাগারে এক ছেলে সন্তান প্রসব করেন রোখসানা। পরে মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। রোখসানার সন্তান বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালের স্পেশাল কেয়ার বেবি ইউনিটে (স্ক্যাবু) রয়েছে। হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তোফাজ্জল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মাত্র ১ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া ওই নবজাতক জন্ডিসসহ কিছু জটিলতায় ভুগছে। প্রথম দিকে নল দিয়ে খাবার দিলেও এখন খাবার বন্ধ আছে। এখনো সে আশঙ্কামুক্ত নয়।
হাসপাতালে রোখসানা সাংবাদিকদের জানান, দেড় বছর আগে বাংলাদেশি যুবক আবদুলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ভারতের বেঙ্গালুরুতে আবদুল আসবাবপত্রের দোকানে কাজ করতেন। বিয়ের আগে তিনি রোখসানার বাড়িতে আসবাবপত্র মেরামতের কাজ করতে যান। সেখান থেকেই তাদের পরিচয়। তিন মাস প্রেম করার পর পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় তাদের। রোখসানার কাছে আবদুলের কোনো ছবি নেই, এমনকি কোনো ফোন নম্বরও নেই। রোখসানা জানান, তার ননদের নাম নিলু। ননদের স্বামীর নাম সোলেমান। আজিমপুর কবরস্থানের কাছেই ননদের বাসা। নারায়ণগঞ্জ নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঘটনার দিন ননদের বাসা থেকেই ননদ ও তাকে নিয়ে বের হন আবদুল। পরে রোখসানাকে কমলাপুর স্টেশনে রেখে বোনসহ সটকে পড়েন আবদুল।
সোলেমান জানান, পাঁচ-ছয় বছর আগে আবদুল চট্টগ্রামে একটি বিয়ে করেন। সেই ঘরে কোনো সন্তান নেই। তারপর আবদুল ভারতের বেঙ্গালুরুতে যান এবং সেখানে বিয়ে করেন। সম্প্রতি দ্বিতীয় স্ত্রী রোখসানাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন।