সিরাজদিখানে সর্ষে ক্ষেতে মৌচাষ

সিরাজদিখানে সর্ষে ক্ষেতে মৌচাষ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ফিচার

সিরাজদিখানে সর্ষে ক্ষেতে মৌচাষ

  • সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯

মৌচাষিরা পালিত মৌমাছি নিয়ে যাচ্ছেন সর্ষে ফসলের ফুল ফোটা জমিতে। সেখানে অজস্র ফুল থেকে মধু আহরণ করে মৌচাকে জমা করছে মৌমাছির দল।

অগ্রহায়ণ থেকেই মধু সংগ্রহের মৌসুম শুরু হয়। এখন পৌষ মাস। এ সময়টায় মৌমাছি ও সর্ষে চাষীদের ব্যস্ততা যেন একসূত্রে গাঁথা। এখন ক্ষেতের পর ক্ষেত, মাঠের পর মাঠ হলুদ রঙে একাকার হয়ে গেছে। ভোরের শিশির বিন্দু ঝরছে ফুলে ফুলে। সূর্য উঠতেই শুরু হয়ে যায় মৌমাছির মধু সংগ্রহের ব্যস্ততা। তা চলে সূর্যের আলো নিভে যাওয়ার আগ পর্যন্ত। সকাল, দুপুর, বিকেল প্রতিটি ক্ষণেই যেন প্রকৃতির নানা রূপ ভর করে সিরাজদিখানের রাজানগর ইউনিয়নের নয়ানগর এলাকার মধুপল্লীতে।

বিস্তীর্ণ জমিজুড়ে এখন মনকাড়া সর্ষে ফুলের হলদে রঙের মেলা। সেখানেই চলছে মৌমাছির মধু আহরণের কর্মযজ্ঞ। সর্ষে ক্ষেতের পাশেই সারিবদ্ধভাবে বসানো হয়েছে মৌমাছির বাক্স। হাজার হাজার মৌমাছি হলুদ রঙের সর্ষে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে জমা করছে। ছয়-সাত দিন পরপর ওই সব বাক্স থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতি বাক্সে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মৌমাছি আর একটি মাত্র রানী মৌমাছি থাকে। রানী মৌমাছি ডিম দেয়। সারাদিন মাছিগুলো সর্ষে ফুলে পরাগায়ন ঘটায় এবং মধু সংগ্রহ করে।

৬০টি বাক্স নিয়ে ‘দিগন্ত’ খামারের মালিক মো.আলম শেখ মৌমাছি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজদিখানের নয়ানগর গ্রামের সর্ষের জমিতে। মৌমাছিগুলো বাক্স থেকে নির্দিষ্ট পথে বের হয়ে ক্ষেতের ফুলে ফুলে বসে মধু সংগ্রহ করে ফিরে আসছে বাক্সে। আর বাক্সের ভেতরে থাকা বিশেষ ফ্রেমে মৌচাকে মধু জমা করছে। প্রতিটি বাক্সে রয়েছে ৮ থেকে ১০টি ফ্রেম।

‘দিগন্ত’ মৌ খামারের মালিক মো.আলম শেখ বলেন,‘ ছয় মাস আমরা মধু সংগ্রহ করি। আমাদের তিন থেকে চার লাখ টাকা আয় হয় তবে আমরা ন্যায্য দাম পাই না এবং বাকি ছয় মাস মৌমাছি পালতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। মৌমাছিকে চিনি খাওয়াতে হয়। তাদের রাখতে আমাদের অনেক খরচ হয়।’

সিরাজদিখান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, ‘মৌমাছির এই চাষ শুধু মৌচাষিকেই স্বাবলম্বী করছে না, বরং দেশের শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করছে। সর্ষে ক্ষেতে মৌমাছি এক ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে অন্য ফুলে গিয়ে বসছে। এতে মৌমাছির পায়ে পায়ে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে পরাগায়ন হচ্ছে। এতে ফসলের উৎপাদন বেড়ে যাচ্ছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। একদিকে ফলন বৃদ্ধি আবার সঙ্গে বাড়তি লাভ মধু।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads