পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বর্তমানে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে যমুনা নদীর কাজিপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ সোমবার দুপুরে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৩.৫৫ মিটার রেকর্ড করা হয়। যা বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (ডেঞ্জার লভেলে-১৩.৩৫)। গত চারদিনে পানি বৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ৩০, ৪০, ৩৩ ও ৩১ সেন্টিমিটার। এতে তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি।
প্রতিদিন বসতভিটা-ফসলী জমি বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে নদী তীরবর্তী মানুষ। মাথা গোঁজার জমি না থাকায় ভাঙ্গন কবলিতরা খোলা আকাশ ও অন্যের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।ভাঙ্গন কবলিতের অভিযোগ, ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন তো দূরের কথা জন প্রতিনিধি বা প্রশাসন সামান্য সহযোগিতাও করছে না।
সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর এনায়েতপুরের ব্রাম্মণগাতী আড়কান্দি, হাট পাচিল এবং কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া,বাঐখোলা পাটাগ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী গর্ভে চলে গেছে অসংখ্য বাড়িঘর। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের মানুষেরা। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ। অনেকে বাড়ি ঘর নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে বাঁধের পাশে আশ্রয় নিচ্ছে। বেশ কয়েকটি উপজেলার বাসিন্দারা বন্যা আতঙ্কে ভুগছে।
সিরজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম ভুইয়া ও মেছড়া ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ জানান, দ্রুতগতিতে যমুনার পানি বাড়ছে। ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বসতবাড়ীতে পানি উঠতে শুরু করেছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত মেছড়া ইউনিয়নের শতাধিক বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
খুকনী ইউপি চেয়ারম্যান মুল্লুক চান জানান, পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এনায়েতপুর ব্রাহ্মণগাঁতী, আড়কান্দি ও হাটপাচিল নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, যমুনায় পানি বৃদ্ধির তীব্রতা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি ৩৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে পানি।
তিনি বলেন, বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে যমুনা নদীর উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। এতে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে আরও তিনদিন পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।