সাইকোলজিস্ট হতে চাইলে...

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শতকরা দশভাগ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত

সংরক্ষিত ছবি

ফিচার

সাইকোলজিস্ট হতে চাইলে...

  • প্রকাশিত ৮ জুলাই, ২০১৮

কথায় কথায় আমরা প্রায়ই সাইকো শব্দটি ব্যবহার করি। আমাদের জীবনে এই শব্দটিকে যেভাবেই ব্যবহার করি না কেন, এর সরাসরি যোগাযোগ আমাদের মনের সঙ্গে। জীবনের গতি বেড়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানসিক অবসাদ ও বিষাদ্গ্রস্ততার মতো সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শতকরা দশভাগ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত। জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে যেকোনো কারণে মনের ঘরে এই রোগ বাসা বাঁধতে পারে। অধিকাংশ সময় আমরা অনেকে সেটা বুঝতে পারি না। তাই আমাদের দেশে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ বিষয়ে যারা লেখাপড়া করেন তাদের বলা হয় সাইকোলজিস্ট। মনের রোগের ডাক্তার তারা। সাধারণত সাইকোথেরাপি, কাউন্সেলিং ইত্যাদির মাধ্যমে এ ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। এ বিষয়ে পড়াশোনা করে আপনিও মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় ভূমিকা রাখতে পারেন এবং গড়তে পারেন সন্মানজনক ক্যারিয়ার। এ বিষয়ে লিখেছেন তনিমা সুলতানা

পড়াশোনা

বাংলাদেশের অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজি বিষয়টি পড়ানো হয়। তবে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এমএসসি ও এমফিল করার সুযোগ রয়েছে।

কাজের ধরন ও সুযোগ

এমফিল ডিগ্রি অর্জনের পর একজন শিক্ষার্থী ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। সরকারি ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, পাবনা মানসিক হাসপাতালে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বেসরকারি ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ক্লিনিক রয়েছে যেখানে মানসিক রোগের সেবা দেওয়া হয়। যেমন- ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল, মেরি স্টোপস, নারীপক্ষ, প্রবীণ হিতৈষী। এ ছাড়াও আমাদের দেশে মানসিক সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করে বেসরকারি উদ্যোগে আরো নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। এর  বাইরে স্বাধীনভাবে চেম্বার করার সুযোগ তো থাকছেই।

তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীতে দশ লাখ মানুষের জন্য সাইকোলজিস্ট রয়েছে মাত্র একজন। আমাদের দেশে এর সংখ্যা আরো কম। নিয়ম অনুযায়ী একজন আরসিআই রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টই মানসিকভাবে অসুস্থ রোগীকে সাইকোথেরাপি দিতে পারে। তবে দেশে তাদের সংখ্যা কম থাকায় সাধারণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাইকোলজিস্টরাই তা দিয়ে থাকেন। সাইকোলজিস্টদের মধ্যে বিশেষ কিছু ভাগ রয়েছে।

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট : গম্ভীর মানসিক ব্যাধির শিকার ব্যক্তিদের জন্য এরা থেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করেন।

কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট : এরা মূলত ইন-হাউজ কাউন্সেলিং করে থাকেন। রোগীর সঙ্গে কথা বলে তার মনের গভীরে পৌঁছে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা তাদের কাজ। অ্যাডজাস্টমেন্ট ডিজঅর্ডার, ডিপ্রেশন, আত্মবিশ্বাসের অভাব ইত্যাদি সমস্যায় কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন হয়।

এডুকেশনাল সাইকোলজিস্ট : শিক্ষার্থীদের পড়ার চাপের ফলে কোনো মানসিক বিকার যাতে দেখা না দেয় বা সব কিছুর সঙ্গে মানিয়ে গুছিয়ে চলতে পারে তা দেখাই এডুকেশনাল সাইকোলজিস্টদের কাজ। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইকোলজিস্ট : কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মীদের নানা মানসিক সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক ও সদ্ভাব বজায় রাখা এবং সুস্থ কাজের পরিবেশ তৈরি করাই এদের কাজ। আমাদের দেশে এ ধরনের সাইকোলজিস্টদের তেমন প্রচলন না থাকলেও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

স্পোর্টস সাইকোলজিস্ট : খেলোয়াড়দের মাঠে মানসিক দৃঢ়তা-মনোবল বাড়ানো এবং সঠিকভাবে মোটিভেট করার কাজটাই করে থাকেন স্পোর্টস সাইকোলজিস্ট। প্রতিটি দলে এরা থাকেন।

পাশাপাশি সাইকোলজির ডিগ্রিধারীরা বিভিন্ন সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান, মেন্টাল হেলথ সেন্টার বা রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads