রাজউকের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে পলাশ-রাজ-আমিন গ্রুপ

ছবি : সংগৃহীত

মহানগর

রাজউকের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে পলাশ-রাজ-আমিন গ্রুপ

এক সময় এই গ্রুপটি জি কে শামীম ও খালেদের হয়ে কাজ করত

  • এমদাদুল হক খান
  • প্রকাশিত ১ মার্চ, ২০২০

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ভবনে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করছে পলাশ-রাজ-আমিন গ্রুপ। তাদের ভয়ে রাজউক কর্মকর্তা ও সাধারণ ঠিকাদাররা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। বিভিন্ন অপকর্ম করার আগে তারা নিজেদের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কর্মী বলে দাবি করেন। তবে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাই দাবি করেছেন, তাদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের কোনো সম্পর্ক নেই।

ঠিকাদাররা বলছেন, পলাশ-রাজ-আমিন গ্রুপ এখন রাজউকের আতঙ্ক। এক সময় এই গ্রুপটি জি কে শামীম ও খালেদের হয়ে কাজ করত। জি কে শামীম ও খালেদ জেলে যাওয়ার পর তারা রাজউকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। সম্প্রতি তারা নিজেদের রাজউক ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। অথচ আগে থেকেই রাজউক ঠিকাদার সমিতি আছে। সেই কমিটিকে বিলুপ্ত না করেই নতুন করে নিজেদের ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির নেতা দাবি করে রাজউকের একটি কক্ষও দখলে নিয়েছে তারা। এ নিয়ে রাজউকের সিনিয়র ঠিকাদারদের মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

রাজউকের বেশ কয়েকজন ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশের খবরকে বলেন, মুন্সী হাবিবুল্লাহ পলাশ ও আমিনুল ইসলাম আমিন ও রাজ গ্রুপের অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ। যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জি কে শামীম এতদিন রাজউকের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করত। তারা গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যাওয়ার পর পলাশ-আমিন গ্রুপ রাজউকে নানা রকম অরাজকতা চালাচ্ছে। তারা বিভিন্ন কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকিসহ ঠিকাদারদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করছে। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে ওই ঠিকাদারকে রাজউক ভবনে ঢুকতে দিচ্ছে না। আবার কোনো কর্মকর্তা তাদের কথামতো কাজ না করলে তাকে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমনকি কাউকে কাউকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার হুমকিও দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব অপকর্ম করায় তাদের ভয়ে এখন অনেক প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার রাজউক ভবনে আসছেন না।

তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাউজক ঠিকাদার সমিতি পরিচালিত হচ্ছে। ঠিকাদারদের কল্যাণে তারা বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। ওই সমিতির সভাপতি কায়জার আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ, যুগ্ম সম্পাদক আবুল ফজল রাজু। তারা সবাই প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার। অথচ ঠিকাদার না হয়েও পলাশ, রাজ ও আমিন নিজেদের রাজউক ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির নেতা দাবি করছেন। তাদের সঙ্গে কোনো ঠিকাদার না থাকলেও তারা স্বঘোষিত ঠিকাদার সমিতির নেতা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবগঠিত রাজউক ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি দাবিকারী মুন্সী হাবিবুল্লাহ পলাশ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আগের কমিটির কোনো কার্যক্রম না থাকায় রাজউকের ঠিকাদাররা তাকে সভাপতি বানিয়ে একটি কমিটি ঘোষণা করেছেন বলে দাবি করেন। এই কমিটি সিনিয়র ঠিকাদারদের মতামত নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তবে নিজের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউক ঠিকাদার সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খালেদ-সম্রাট ও জি কে শামীমরা রাজউক ভবন দখলে রেখেছিলেন। তাদের কারণে ঠিকাদার সমিতি কোনো কাজ করতে পারেনি। তারা জেলে যাওয়ার পর ঠিকাদার সমিতি নতুনভাবে কার্যক্রম শুরু করতে গেলে আবার বাধ সাধে খালেদ-জি কে শামীমেরই সহযোগী পলাশ-রাজ-আমিন গ্রুপ। তারা কোনো ঠিকাদারের সঙ্গে কথা না বলেই নিজেদের ঠিকাদার সমিতির নেতা দাবি করছেন। অথচ তাদের সঙ্গে রাজউকের প্রতিষ্ঠিত কোনো ঠিকাদার নেই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads