রংতুলির সঙ্গে সখ্য সেই ছোট থেকেই। শিক্ষার্থী থাকাবস্থায় শখের বসে নিজের জামা নিজেই হ্যান্ডপেইন্ড ও হাতের কাজে তৈরি জামা পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। সেই পছন্দ থেকে এখনো নিজের জামা কাপড় নিজেই সেলাই করে পরেন তিনি। কাপড় ও রঙের সরাসরি উৎপাদিত নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী পাশাপাশি দুটি জেলাতেই সমানতালে চষে বেড়িয়েছেন তিনি। রঙের সাথেই যেন সেখানকার মানুষের নিত্যদিনের খেলা। কাপড় নিয়ে কাজ করার পেছনে এই দুই জেলা আগ্রহ বাড়িয়েছে বলে তিনি জানান। শুরু করেন পোশাক নিয়ে উদ্যোক্তা জীবনের পথচলা। সেটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বর। পাশাপাশি শুরু করেন কাঠের গহনায় রংতুলির কাজও।
যার গল্প বলছি তিনি আফরোজা চৌধুরী। বেড়ে উঠেছেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে। গোপালদী নজরুল ইসলাম বাবু কলেজে উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।
প্রথমে কাঠের গহনা, আংটি, চুড়িসহ বিভিন্ন সাজের পণ্য তৈরি করে নিজের কাছের মানুষদের জানিয়েছিলেন। অনেকেই পছন্দ করে সেগুলো অর্ডার দেওয়া শুরু করেন। তিনি বলেন, ভাললাগার কাজের প্রথম রিভিউটা যেদিন পেয়েছিলাম অনেক বেশি এক্সাইটেড ছিলাম। রং যেহেতু ভালোলাগার বিষয় সেই সুবাধে ‘রঙবার’ নামে অনলাইনে ফেসবুকে একটা পেজ তৈরি করে সেখানে পছন্দের কাজগুলোর ছবি পোস্ট করা শুরু করেন।
এক হাজার তিনশ টাকা দিয়ে কাঠের গহনার কিছু বেইজ আর আনুষঙ্গিক উপকরণ এবং দুই হাজার পাঁচশত টাকার গজ কাপড় কিনে এনে কয়েকটি জামার ডিজাইন করে ফেসবুক পেজে দিলেন। মন দিলেন রঙের কাজে। রঙবারের শুরুর যাত্রাটা ছিল এমনই। শীত উপলক্ষে ব্লকের শীতের শাল, ব্লকের শাড়ি, থ্রি-পিস নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নারী উদ্যোক্তাদের কাজগুলো একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন তিনি। আফরোজা চৌধুরী বলেন, প্রথমে আমার মা কিছুটা বাধা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তোমাকে এত কষ্ট করতে হবে না। কিন্তু এখন মেয়ের কাজের প্রতি আগ্রহ দেখে আরো বেশি উৎসাহ দেন।
শিক্ষকতা পেশায় আছেন বলে প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি সময়টুকু উদ্যোগে দিতে পারছেন বলে তিনি জানান। এই পেশায় থেকে উদ্যোগ সামনে এগিয়ে নেবার সুবিধা সম্পর্কে আফরোজা চৌধুরী বলেন, রঙবারকে প্রমোট করার পেছনে আমার শিক্ষার্থীদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে।
কাজের প্রতি ভালোবাসা আর ডেডিকেশন থাকলে যেকোন পেশা থেকেই নিজের উদ্যোগকে ভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
ফেসবুক পেজ ‘রঙবার’-এ চোখ রাখলে গ্রাহকরা রঙবারে উৎপাদিত তাদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য পেতে পারবেন বলে তিনি জানান। এ ছাড়া যে কারো পছন্দ অনুযায়ী পণ্যের কাস্টমাইজ করেও পোশাক তৈরি করে থাকেন তিনি।





