শিশু রাইফার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ম্যাক্স হাসপাতালের দুই চিকিৎসক চাকরিচ্যুত

ছবি সংরক্ষিত

জাতীয়

শিশু রাইফার মৃত্যু

ম্যাক্স হাসপাতালের দুই চিকিৎসক চাকরিচ্যুত

  • চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • প্রকাশিত ৭ জুলাই, ২০১৮

চট্টগ্রামে শিশু রাইফার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেবকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিয়াকত আলী জানান, তদন্তে ওই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী মেয়ে রাইফা গলায় ব্যথা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে বন্দর নগরীর মেহেদীবাগের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পরদিন শুক্রবার রাতে তার মৃত্যু হয়।

‘ভুল চিকিৎসায়’ রাইফার মৃত্যু হয়েছে- এমন অভিযোগে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকরা। পরে ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটিও এ ঘটনার তদন্ত করে।

সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের প্রতিবেদন দেয়।  তদন্তে এ ঘটনায় হাসপাতালের তিন চিকিৎসক- শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী এবং ম্যাক্স হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেবকে দায়ী করা হয়েছে। অভিযুক্ত চিকিৎসক ও ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে তদন্ত কমিটির রিপোর্টটি সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস।

তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিশু রাফিদা খান রাইফা যখন তীব্র খিচুনিতে আক্রান্ত হয়, তখন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। ওই সময়ে উপস্থিত থাকা সংশ্লিষ্ট নার্সদের আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও দক্ষতা বা জ্ঞান কোনোটাই ছিল না তাদের। ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রে রাইফার অভিভাবকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা করে দেখেননি। ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব শিশুটির রোগ জটিলতার বিপদকালীন আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা প্রদান করেননি বলে শিশুর পিতা-মাতা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যা এই তিন চিকিৎসকের বেলায় সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।

এ সময় চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, 'তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি চট্টগ্রাম বিএমএ সভাপতি, সিইউজের সভাপতি এবং চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে দোষী ব্যক্তিদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় থেকে যেভাবে নির্দেশনা দেবে আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads