আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্যে রেকর্ড করেছে। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্যে রেকর্ড করেছে। যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে তারা বিএনপির নেতাদের বাড়িতে গিয়েও ধরনা দিচ্ছেন। টাকা ফেরত দেওয়ার ভয়ে সেইসব নেতা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এসএম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যে হূদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আর এ জোটের মধ্যে অবিশ্বাসের কোনো জায়গা নেই। আর কোনো ধরনের টানাপড়েনও নেই। দুয়েক দিনের মধ্যে আমাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে পারব। তারপর জোটগতভাবে আমাদের প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বলে বিএনপির নেতাদের অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, জিয়া পরিবার আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল। আওয়ামী লীগ কখনো নিশ্চিহ্ন করার রাজনীতি করেনি, করবেও না। কারণ আওয়ামী লীগ এ ধরনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়া পরিবারই বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য সব ধরনের ষড়যন্ত্র করেছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নিরাপদে বিদেশে পালিয়ে যেতে সহায়তা করা, ইনডেমনিটি বিল পাস করে তা সংবিধানে স্থান দেওয়ার কাজগুলো ওই জিয়া পরিবারই করেছিল। তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের নেপথ্যে তারাই ছিল, খুঁজলে তাই বেরিয়ে আসবে। তারাই আবার সেই খুনিদের পুরস্কৃত ও পুনর্বাসিত করেছিল। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। এ মামলার বিচার হয়েছে। আদালত রায় দিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন আমরা জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করব কীভাবে? জিয়া পরিবারই তো বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে কোনো কিছু করতে বাদ রাখেনি। ইতিহাস তা প্রমাণ করেছে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের দলটির মহাসচিব পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব রহুল আমিন হাওলাদারের অব্যাহতির বিষয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। এটা জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ বিষয়। দলটির চেয়ারম্যানের নির্দেশেই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী আহমেদের প্রতি ইঙ্গিত করে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, নয়াপল্টনে বিএনপির একজন আবাসিক প্রতিনিধি রয়েছেন। যিনি গুজব আর সন্ত্রাস ছড়ানোর কারখানা। তার আর কোনো কাজ নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, বিএনপি নেতা তারেক রহমানের ইশারাতে ড. কামাল পুতুলের মতো নাচছেন। তার কোনো ক্ষমতা নেই। তাদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া পুতুল নাচে পরিণত হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন বিএনপির সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে বলে করা বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ইসি যদি বিএনপিকে বিজয়ী করত তাহলে তাদের সঙ্গে প্রকৃত মায়ের আচরণ করত, নাকি? আওয়ামী লীগ নির্বাচন থেকে সরে যাবে জেএসডি নেতা আ স ম আবদুর রবের এমন বক্তব্যের জবাবে কাদের বলেন, ‘তার এ বক্তব্য এ শতকের বিশ্বরেকর্ড।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে। তারা নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে।