মনোনয়ন বঞ্চিত সমর্থকদের হামলায় আহত মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িতে হামলা

ছবি: টিভি ফুটেজ থেকে নেয়া

রাজনীতি

মনোনয়ন বঞ্চিত সমর্থকদের হামলায় আহত মির্জা ফখরুল

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িতে হামলা করেছেন মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকরা।

গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের উদ্দেশে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের ছোঁড়া ইট-পাটকেলে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মনোনয়ন বঞ্চিতদের সমর্থকরা চেয়ারপারসন কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে। এ সময় সেখানে থাকা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িতেও তারা হামলা করে। এতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায় এবং চালক হেলাল রক্তাক্ত হন।

এর আগে শনিবার দিনভর বিক্ষোভ হয়েছে গুলশান কার্যালয় ও নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সকালে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে। হামলায় আহত হন গোপালগঞ্জ-১ আসনের দলীয় প্রার্থী শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর ও তার পুত্র রিমন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন শাহ আলম ফারুকসহ কয়েকজন সাংবাদিক। সন্ধ্যার পর গুলশান অফিসে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খানসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে অবরুদ্ধ করে তারা কার্যালয়ের প্রধান ফটকে লাথি মারেন ও ইট-পাটকেল ছুড়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। কার্যালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে কার্যালয়ের জানালার কাচ ভেঙে যায়।

জানা গেছে, এই তাণ্ডবে অংশ নেন চাঁদপুর-১ আসনের মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন, নারায়ণগঞ্জ -১ আসনের বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার, গোপালগঞ্জ-১ আসনের সেলিমুজ্জামান সেলিম, ঢাকা-১২ আসনের আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, চুয়াডাঙ্গার শামসুজ্জামান দুদু, চট্টগ্রামের মোস্তফা কামাল পাশা, ঢাকা-৬ এর ইশরাক হোসেন, ময়মনসিংহ-৪ এর দেলোয়ার হোসেন দুলু, ১০ এর সিদ্দিকুর রহমান, মানিকগঞ্জ-১ আসনের তোজাম্মেল হক তোজা, শেরপুর-২ আসনের ফাহিম চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার কর্মী-সমর্থকরা। এর আগে সকালে এহছানুল হক মিলনের অনুসারীরা নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলায়। এর পর প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য ১২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে দুপুর ২টার দিকে তালা খুলে দেয়। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এসে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে গুলশান কার্যালয় ঘেরাও করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি বিক্ষোভ করেন তারা। এতে জানালার কাচ ভেঙে যায়। এ সময় কিছু নেতা-কর্মী ইটপাটকেল নিক্ষেপকারীদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেন।

বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে রাতে দলের পক্ষ থেকে মাইকিং করে বলা হয়, ‘আপনারা ধৈর্য ধরুন, শান্ত থাকুন। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে, তারেক রহমান বিদেশে। এ অবস্থায় আপনারা সবাই ধৈর্য ধরুন। আপনারা দলের পরীক্ষিত নেতা-কর্মী। আপনারা আগামীকাল (আজ) রবিবার সকাল ১০টায় আসবেন। সকালে মনোনয়ন বিতরণ করা হবে। কেউ কোনো ঝামেলা করবেন না। সবাই চলে যান।’ ঘোষণায় আরও বলা হয়, ‘সবাই দয়া করে শুনুন, এটা আমাদের সবার অফিস। আজকে কোনো মনোনয়ন বিতরণ করা হবে না, কারও মনোনয়ন দেওয়া হবে না। দয়া করে কেউ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবেন না।’ এরপর রাত পৌনে সাতটার দিকে তৈমুর আলমের সমর্থকেরা সরে যান। তবে এ সময় তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা হুঁশিয়ার-সাবধান’ শ্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভরত মিলনের একাধিক সমর্থক অভিযোগ করেন, এহছানুল হক মিলনের জায়গায় চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. মোশাররফ হোসেনকে এলাকায় কেউ চেনেন না। সারা জীবন তিনি মালয়েশিয়ায় ছিলেন। এহছানুল হক মিলন পাঁচ বছর দেশের বাইরে থাকলেও তার সঙ্গে এলাকার মানুষের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এখনও তিনি জেলে আছেন, তার ত্যাগকে মূল্যায়ন করা হয়নি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads