মধ্যযুগীয় নিদর্শন হারুলিয়া জামে মসজিদ

হারুলিয়া জামে মসজিদ

ছবি : ইন্টারনেট

ফিচার

মধ্যযুগীয় নিদর্শন হারুলিয়া জামে মসজিদ

  • নেত্রকোনা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৭ জুলাই, ২০১৮

প্রাচীন ঐতিহ্যের অপূর্ব নিদর্শন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার হারুলিয়া দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ। এলাকাবাসীর কাছে মসজিদটি ‘গাইনের’ মসজিদ নামে পরিচিত। উপজেলার মোজাফফরপুর ইউনিয়নের হারুলিয়া গ্রামে অবস্থিত ৮০০ বছরের পুরনো এ মসজিদটি মধ্যযুগীয় আমলের এক ঐতিহ্যের নিদর্শন।

এ মসজিদের কোনো পূর্ণাঙ্গ তথ্য সুনির্দিষ্ট করে কেউ দিতে পারেননি। তবে মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্য মতে, মসজিদের মূল প্রবেশপথের দরজার ওপর ফারসি ভাষায় লেখা একটি শিলালিপি ছিল, যেটি গত বছর দুষ্কৃতকারীরা চুরি করে নিয়ে গেছে। ওই পাথরটিতে ফারসি ভাষায় কয়েকটি বাক্য লেখা ছিল। ওই বাক্যগুলোর বাংলা অর্থ করলে ধারণা করা যায়, শায়খে মুহাম্মদ ইয়ার নামে একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তির উদ্যোগে ১২০০ খ্রিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। তাছাড়া স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী সময়ে তৎকালীন এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুস সালামও ওই মসজিদে যাতায়াত করেছেন। একপর্যায়ে তিনি ওই পাথরটির ওপর থেকে ধুলোবালি পরিষ্কার করে মসজিদটির নির্মাণকালসহ এর ইতিহাস-সংবলিত লেখাটি আবিষ্কার করে নিশ্চিত হন, এলাকার ঐতিহ্য এ মসজিদটি ১২০০ খ্রিস্টাব্দেই নির্মিত হয়েছিল। আর তখন ছিল মধ্যযুগীয় আমল। প্রয়াত শিক্ষাবিদ আবদুস সালামের মসজিদটির নির্মাণকাল সম্পর্কে দেওয়া বক্তব্যের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এলাকার প্রবীণ শিক্ষক মো. মুহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, শিক্ষাবিদ আবদুস সালামের বাড়ি ছিল উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের আতকাপাড়া গ্রামে। ১৯৬৫ সালের দিকে তিনি মসজিদের দেয়ালে লাগানো মূল্যবান পাথরটির ওপর ফারসি ভাষার লেখাটি তরজমা করে নিশ্চিত হয়েছিলেন মধ্যযুগীয় আমলে অর্থাৎ সেন বংশের চতুর্থ রাজা লক্ষণ সেনের আমলে ১২০০ খ্রিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়ছিল। প্রবীণ শিক্ষক মুহিউদ্দিন আহমেদ আরো জানান, প্রাচীন এ মসজিদটি বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার সংস্কার করা হয়। এক সময় ব্যবসায়িক কাজে এলাকায় আসা ‘গাইন’ সম্প্রদায়ের লোকজনও মসজিদটির উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অবদান রেখেছিলেন। আর এ কারণেই দীর্ঘকাল ধরে এলাকার মানুষের কাছে এ মসজিদটি সবচেয়ে বেশি পরিচিত ‘গাইনের’ মসজিদ হিসেবে। এদিকে প্রায় ১৮ বছর ধরে মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। তিনিও জানিয়েছেন, মসজিদের মূল প্রবেশপথের দরজার ওপর মূল্যবান পাথরটিতে ফারসিতে লেখা বাক্যগুলো পড়েছেন। আর ওই বাক্যগুলো এখনো তিনি মুখস্ত রেখেছেন, যা বাংলায় অনুবাদ করলে অর্থ দাঁড়ায়- শায়খে মুহাম্মদ ইয়ার ছিলেন এলাকার একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যক্তিত্ব। আর তার উদ্যোগেই ১২০০ খ্রিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads