প্রবাদ আছে, মতলবের ক্ষীর আর বগুড়ার দই, না খেয়ে ক্যামনে রই! কথাটি শুধু চাঁদপুর নয়, বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষের মুখে মুখে। মতলবের ক্ষীরের সুনাম শতবছরের। প্রসিদ্ধ এ ক্ষীর দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রফতানি করা হতো, এখনো হচ্ছে। এর চাহিদা অনেক। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা মতলব বাজারে এনে দুধ বিক্রি করতেন। ওই সময় মতলবের ঘোষপাড়া ছিল ক্ষীর, দধি ও ঘি তৈরির আস্তানা। সেই সুবাদে কয়েকটি ঘোষ পরিবারের সদস্য অল্প দামে দুধ কিনে উন্নতমানের ক্ষীর তৈরি করতেন। ওই সময় থেকেই মতলবের ক্ষীরের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। গুণ, মান ও স্বাদের কারণে ব্রিটিশ আমলে এখানকার জমিদার ও ইংরেজদের কাছে এই ক্ষীর খুবই প্রিয় ছিল বলে জানান বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের সদস্য উপজেলা সদরের দক্ষিণ কলাদী এলাকার বাসিন্দা অহিদুল ইসলাম।
উপজেলা সদরের কলেজ রোডে অবস্থিত ক্ষীর বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান নন্দকেবিন। দোকানটির মালিক বাসু ঘোষ বলেন, পাঁচটি কারণে এখানকার ক্ষীর গুণে ও মানে সেরা। প্রথমত, গৃহস্থের কাছ থেকে সংগ্রহ করা খাঁটি দুধ দিয়ে এ ক্ষীর বানানো হয়। দ্বিতীয়ত দুধ ও চিনি মিশ্রণের অনুপাতে হেরফের হয় না। এক কেজি ক্ষীর বানাতে পাঁচ কেজি দুধ ও ৫০-৬০ গ্রাম চিনি মেশানো হয়। তৃতীয়ত ক্ষীরে ময়দা বা আটা মেশানো হয় না। চতুর্থত দুধের ননী ওঠানো হয় না। ননীসহ ক্ষীর বানানো হয়। পঞ্চমত লাকড়ির চুলায় ক্ষীর তৈরি করা হয়।
প্রবীণ ক্ষীর ব্যবসায়ী বিমল মুহুরী বলেন, বর্তমানে এক কেজি দুধের দাম ৬০-৭০ টাকা। চিনিসহ অন্যান্য খরচ মিলে এক কেজি ক্ষীর বানাতে খরচ পড়ে ৪০০ টাকা। প্রতি কেজি ক্ষীরের দাম পড়ে ৪৫০ থেকে ৪৬০ টাকা।