সাইফুল ইসলাম, সিংগাইর:
পদ্মায় গিলে খাইছে বসত বাড়ী , তিনতিনটি পানের বুরুজ, স্বামী খাইছে পাকবাহিনীরা এখন ভিক্ষা করেই জীবন জীবিকা চলে, সখ করে কি এই বয়সে হরিরামপুর হতে সিংগাইরে এসে ভিক্ষা করি । ষাটোর্ধ বৃদ্ধ আমেনা বেওয়া প্রতি শুক্র বার সিংগাইর কোট মসজিদে এসে জুমার নামাজের সময় দুই একটাকার জন্য চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় থাকে। যে যা দেয় তাই নিয়ে সে খুশি থাকে। পদ্মায় গিলে খাইছে স্বামীর বসতবাড়ি তিনতিনটি পানের বুরুজ , স্বামী খাইছে হায়ানার দলে নিস্ব আমেনার জীবন চলে ভিক্ষার চালে। এসব কথা দঃখ করে গনমাধ্যম কর্মীর সামনে বিরবির করে বলতে বলতে চোখের পানি ছেড় দেন ভিক্ষুক আমেনা। তিনি হরিরামপুর উপজলার কান্টাপাড়া রাস্তার পাশে বসবাস করেন । স্বামী জলিলের বাড়ি ছিল রামকৃষ্ণ পুর গ্রামে। বাবার বাড়ী ছিল ফরিদপুরে । আমেনা প্রথমে হিন্দু ধর্মের অনুসারী ছিলেন । জলিলের সঙ্গে বিবাহ হওয়ায় পিতা মাতা তাকে আর কুলে নেয়নি। এ কারণে মা বাবার ভিটে বাড়ী চিরদিনের জন্য অচেনা হয়ে যায় তার। তিনি দুই সন্তানের জননী । স্বামীর জায়গা জমি তিনতিটি পানের বুরুজ ছিল। গরু ছাগল ছিল টাকা পয়সার অভান ছিলনা। স্বামীর সংসার জীবন ভালই কাটছিল তার। পানের বুরুজে পানতুলতে গেলে পাক-হানাদার বাহিনীরা তার স্বামী কে ধরে বেদম প্রহার করেন। এরপর ভয়ে মারা জান স্বামী জলিল। কালা জ্বরে মারা যায় পুত্র সন্তান। মেয়ে বিবাহ হয়ে গেছে অনেক আগেই। অন্যের বাড়িতে জিয়ের কাজ, মাটি কাটার কাজ করে একবেলা খেয়ে আরেক বেলা নাখেয়ে দিনাতিপাত করেন তিনি। সবাই তারে ছেড়ে গেছে দুঃখ তারে ছাড়েনাই দুখ নাকি আমেনার মায়ের পেটের ছোট ভাই। এখন বয়স হয়েছে। শরীরে অসুখ বিসুখে, বাসা বেঁধেছে। শুকিয়ে শরীর সার কংকাল বের হয়ে গেছে। বুকের ও হাতের হাড় বের হয়েগেছে। এ যেন জসিম উদ্দিন নের সেই আসমানী কবিতার আরেক প্রতিচ্ছবি। শক্তি নেই আগের মত। এরবপর থেকে শুরু হয় তার সংগ্রামীবজীবন। এখন মেয়ের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছেন । মেয়ের জামাই যে অর্থ উপার্জন করেন তাতে তার সংসার চলাই কষ্ট । আমেনার ভিক্ষা করে যে টাকা পায় তা দিয়ে একবেলা খেয়ে আরেক বেলা না খেয়ে কোন রকম দিনাতিপাত করেন। এখন বয়সের ভারে নব্জ । চোৃেখে কম দেখন , কানেও তেমন শুনেননা। এই বয়সে সেবা শুশ্রূষা পসওয়ার কথা সেই বয়সে অনা দরে অবহেলায় কাটে তার বেলা। আমেনা বলেন এখন আর জানে সহ্য হয়না , ওষধ লাগে প্রতিদিন তানাহলে ভিক্ষা করতে কি এত দূরে আসি।