ব্ল্যাকমেইল নাকি ট্রাম্পের রাজনীতি!

ছবি : সংগৃহীত

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

জেফ বেজোসের অন্তরঙ্গ ছবি

ব্ল্যাকমেইল নাকি ট্রাম্পের রাজনীতি!

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

অ্যামাজন ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস মার্কিন ট্যাবলয়েড সাময়িকী ন্যাশনাল এনকোয়ারারের মালিকের বিরুদ্ধে ‘অন্তরঙ্গ ছবি’ ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ করেছেন। ওই সাময়িকীটির মালিকপক্ষ আবার বেজোস বিরোধীপক্ষ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পঘনিষ্ঠ। আর বেজোস ট্রাম্পের সর্বাধিক সমালোচনাকারী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার মালিক। এ কারণে অনেকেই মনে করছেন বেজোসকে নিয়ে এই জটিলতা অনেকটাই রাজনৈতিক।

সম্প্রতি বেজোস ও তার স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি ছাড়াছাড়ির ঘোষণা দেন। তাদের ওই ঘোষণার পরপরই ন্যাশনাল এনকোয়ারার বেজোসের পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদন প্রকাশের আগে ন্যাশনাল এনকোয়ারার বেজোসকে জানায় যে, তারা বেজোস ও লরেন স্যানশেজের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ বার্তা প্রকাশ করবে। লরেন একজন সাবেক টেলিভিশন অ্যাঙ্কর যার সঙ্গে বেজোস ডেটিং করছেন বলে বিভিন্ন সময় খবর প্রকাশিত হয়েছে। ওই ঘটনার কয়েক দিন পরেই বেজোস দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা পরামর্শদাতা এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রিগানের প্রাক্তন নিয়োগকর্তা গ্যাভিন ডি বেকারের নেতৃত্বে একটি তদন্ত শুরু হয়।

তবে ওই সাময়িকীর পরিচালনা প্রতিষ্ঠান আমেরিকান মিডিয়া ইনকরপোরেশন (এএমআই) তাকে একটি তদন্ত করতে নিষেধ করেছে বলে অভিযোগ করেন বেজোস।

বেজোস বৃহস্পতিবার এক ব্লগ পোস্টে একটি ই-মেইলের কথা উল্লেখ করে জানান, এএমআইয়ের প্রতিনিধির পক্ষ থেকে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বেজোসের প্রেমিকা সাবেক টিভি উপস্থাপিকা লরেন সানচেজের সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশ করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

বেজোস বলেছেন, এএমআই তার কাছ থেকে মিথ্যা বিবৃতি দাবি করে, ন্যাশনাল এনকোয়ারারে তাকে ও তার স্ত্রীকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বেজোস লিখেছেন, নিশ্চয়ই আমি আমার ব্যক্তিগত ছবি প্রকাশ করতে চাইব না, তবে আমি ব্ল্যাকমেইল, রাজনৈতিক পক্ষপাত, রাজনৈতিক আক্রমণ এবং দুর্নীতির সুপরিচিত অনুশীলনগুলোয় অংশগ্রহণও করব না। এর চেয়ে আমি এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে চাই, এই প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হব এবং দেখব কী বের হয়ে আসে। তিনি বলেন, তারা যেসব হুমকি আমাকে দিয়েছে তার সবকিছু আমি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বেজোস তার পোস্টে এএমআই ডেপুটি জেনারেল কাউন্সিল, জন ফাইনের কাছ থেকে ডি বেকারের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীকে পাঠানো একটি ইমেলকে উদ্ধৃত করেছেন। এটিতে এএমআই বেজোস এবং ডি বেকারকে জনসম্মুখে এক স্বীকারোক্তির প্রস্তাব দেয় যে এএমআই কভারেজটি রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত বা রাজনৈতিক বাহিনী দ্বারা প্রভাবিত ছিল এই দাবির ব্যাপারে তাদের কোনো ধরনের ধারণা বা ভিত্তিই নেই।

ইমেলের মতে, এই স্বীকারোক্তির জন্য এএমআই বেজোস তার অপ্রকাশিত ব্যক্তিগত ছবি ও বার্তাগুলো প্রকাশ, শেয়ার বা বিতরণ না করার প্রস্তাব দেয়।

ট্রাম্প ও বেজোস

ট্রাম্পের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই বেজোসের ঝামেলা চলছে। বেজোস ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরোধিতায় সোচ্চার ছিলেন। এ ছাড়া বেজোস ওয়াশিংটন পোস্টেরও মালিক। ট্রাম্প নিয়মিত পত্রিকাটির সংবাদ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে আসছেন। তাই নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই ট্রাম্প অ্যামাজনের সমালোচনা করে আসছিলেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের যোগ্যতা নিয়ে বরাবরই সন্দেহ প্রকাশ করে এসেছে বেজোসের মালিকানাধীন পত্রিকাটিও। বিষয়টিকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিয়ে ট্রাম্প এখন সুযোগ পেলেই বেজোস ও অ্যামাজনকে আক্রমণ করেন। ট্রাম্প পত্রিকাটিকে ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘দ্য অ্যামাজন ওয়াশিংটন পোস্ট’। তার ভাষায়, ‘ফেক নিউজ’ বা ভুয়া খবর পরিবেশনকারী এই পত্রিকাটি ঠিকভাবে ইন্টারনেট কর দেয় না। তাই বেজোসকে ফাঁসাতে পরকীয়ার কাহিনি সাজানো কি না, তাও সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। বেজোসের ব্যক্তিগত ছবি কীভাবে অন্যের হাতে গেল, তা খুঁজে দেখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে বেজোসের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দল তৎপর হয়ে উঠেছে। তার ব্যক্তিগত ফোন পরীক্ষা করে দেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। দ্য ডেইলি বিস্ট বলছে, সানচেজ সন্দেহের বাইরে। ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, বেজোসের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এর পেছনে পুরোটাই রাজনীতি। জেফ বেজোস ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যের দা-কুমড়া সম্পর্কে পরিণতি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads