পরিবেশ বান্ধব জৈব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রচলিত ও অপ্রচলিত নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও সম্প্রসারণসহ এলাকার খেটে খাওয়া মানুষদের কর্মসংস্থানে অবদান রাখায় ব্যক্তি পর্যায়ে দেশের শ্রেষ্ঠ কৃষকের প্রথম পুরস্কারে মনোনীত হয়েছেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার মোঃ হামিদুল ইসলাম।
গত ২৪ জানুয়ারী থেকে ২৬ জানুয়ারী বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিনে জাতীয় সবজি মেলা ২০১৯ এর আয়োজন করে। এতে দেশের শ্রেষ্ঠ সবজি চাষির প্রথম পুরুষ্কার লাভ করেন মোঃ হামিদুল ইসলাম। বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিক্সসন চন্দ্রপাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হামিদুল ইসলাম বিরামপুর উপজেলার পৌরসভার মামুদপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদ এর ছেলে।
কৃষক হামিদুল ইসলাম জানান, নিজের জমি মাত্র ষাট শতক আর অন্যের ২০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে এইক জমিতে চার ধরনের সবজি ফসল উৎপাদন করেন তিনি। উৎপাদিত সবজির মধ্যে গ্রিণ বার্ড হাইব্রিড শশা, করলা, মিষ্টি কদু, শিম একই সঙ্গে উৎপাদন করা হয়। আবার কিছু জমিতে আলাদা ভাবে মরিচ, হাইব্রিড মরিচ, ফুল কপি, বাধাঁ কপি, পিয়াজ, বেগুন, ডোপা সাহেব বেগুন, রসুন আবাদ করা হয়।
হামিদুল ইসলাম জানান, নিজের চেষ্ঠায় দেশ স্বাধীনের পর থেকে ২০ হাজার টাকায় প্রথম সবজি চাষ শুরু করা হয়। পরে প্রতি বছর একটু একটু করে এখন নিজেরসহ অন্যের বর্গা নেয়া ২০ বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেন তিনি। এতে উপজেলা কৃষি অফিস তাকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন।
তিনি জানান, এই কাজে তার তিন ছেলেও তাকে সহযোগিতা করেন। তাছাড়া তার আবাদকৃত জমিতে এলাকার প্রায় ৩০ জন লোক প্রতি দিন কাজ করেন।
হামিদুল ইসলাম জানান, এই বছর ৩ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার শশা, ২ লক্ষ ৫ হাজার টাকার করলা, ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার মরিচ, ৪০ হাজার টাকার মিষ্টি কদুসহ প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ফসল বিক্রি করা হয়েছে। এতে তার উৎপাদিত ফসলে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে। তার উৎপাদিক ফসল দেশের বিভিন্নস্থানে রপ্তানী হয় বলেও তিনি জানান।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার উপজেলায় ১১শ পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। এই সবজিগুলোর মধ্যে আগাম সবজি ছিল অনেক বেশি,ফুল কপি ,বাধা কপি, করলা, শিম, টমেটো ছিল উন্নতম। গত ৫ বছরে এই উপজেলাতে প্রায় ১ হাজার হেক্টর সবজি চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা নিক্সসন চন্দ্রপাল জানান, জাতীয় পর্যায়ে বিরামপুর উপজেলা থেকে এক জন কৃষকের নাম উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। জেলা থেকে ভিবিন্ন ভাবে যাচায় বাচায় শেষে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে পাঠানোর পর কতৃপক্ষ তাকে দেশ সেরা নির্বাচন করেন। তার এই অবদানের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষথেকে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তিনি জানান, হামিদুল ইসলাম একই জমিতে চার ধরনের সবজি উৎপাদন করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তার উৎপাদিত এই সবজিগুলো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অনেক জেলাতেই চলে যায়। এক জমিতে বিভিন্নধরণের সবজি উৎপাদনে বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস তাকে তথ্য ও কারিগরী সহায়তা প্রদান করেছে।