বিকৃত যৌনাচার থেকে সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠা ঝিনাইদহের ইয়াদ আলী ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় এক নারীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেন। এটি তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে এক সপ্তাহের ব্যবধানে একইভাবে আঘাত করে নারীসহ তিনজনকে হত্যার রহস্য।
জানা গেছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে বিবিজান বেগম (৪৫) নামের এক নারীকে ধর্ষণ চেষ্টায় বাধা দিলে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে নড়াইল জেলা শহরের ডুমুরতলা গ্রামের মৃত চাঁন মোল্লার ছেলে ইয়াদ আলী। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে র্যাবে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় ওই দিন নিহতের ছেলে আবু জাফর বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে র্যাব ইয়াদ আলীকে পুলিশে সোপর্দ করে। মামলা হওয়ার পর আসামীক নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। আঘাতের ধরণ একই বুঝে সন্দেহ হলে ওই দুই হত্যার সঙ্গে জড়িত কিনা তা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। একপর্যায়ে স্বীকার করে আরও দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার জানান, বিবিজান বেগমকে হত্যার পর আঘাতের ধরন দেখে তাদের সন্দেহ হয়। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি তেতুলতলা এমকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে ইলিয়াস পাটোয়ারী ও ৯ জানুয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিড়ির নিচ থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদেরও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা ইয়াদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি ওই দুটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেন।
ইয়াদ আলীর দেওয়া বর্ণনার বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে এমকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ইলিয়াস পাটোয়ারীকে তিনি টিউবওয়েলের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন। এর আগে লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তিকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান ইয়াদ আলি। তার পচা ও গলিত লাশের গন্ধ আশপাশের মানুষ বুঝতে পেরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ তদন্ত করে ও তার হত্যার বর্ণনা দেখে এটা নিশ্চিত হয়েছে যে বিকৃত যৌনাচার ও ধর্ষণে বাঁধা দেওয়ার কারণে ইয়াদ আলী এই তিনটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ সোহেল রানা বলেন, তিনটি ঘটনার মধ্যে দুটিতে হত্যা মামলা ও একটিতে অপমৃত্যু মামলা হয়েছিল। এখন তিনটিই হত্যাই মামলা বলে গণ্য হবে। তারা আরো জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন সিরিয়াল হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ইয়াদ আলী আরো কোনো হত্যার সঙ্গে জড়িত কি না।





