মৌলভীবাজার চায়ের দেশ খ্যাত সবুজ শ্যামল চা বাগান ঘেরা শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিটিআরআই) প্রধান কার্যালয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীলতা ও গুণগত মান বৃদ্ধি, চা শিল্পের উন্নয়ন ও উৎকর্ষে বিজ্ঞান ভিত্তিক পরামর্শ ও সহায়তা দান এবং গবেষণালব্ধ প্রযুক্তি চা শিল্পে বিস্তার করাই এ প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য। বর্তমান সরকার এ ইনস্টিটিউটে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সংযোজনের মাধ্যমে এর কর্মপরিধি যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি উন্নত হচ্ছে বাংলাদেশের চা শিল্প।
চা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল ও রফতানি পণ্য। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদার পরিমাণ দ্রুত বেড়ে চলছে। বাংলাদেশের চা অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়েও প্রতি বছর আনুমানিক ১ মিলিয়ন কেজি চা বিদেশে রফতানি হয়ে থাকে। গবেষণার মাধ্যমে উন্নততর প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রয়োগের ধারাবাহিকতার লক্ষ্যেই ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই)।
চা-কন্যার দেশ আর চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ১৯৫৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিস্তান চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (পিটিআরআই) যা স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) নামকরণ করা হয়। শুরু থেকেই বিটিআরআই সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ চা বোর্ডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য ছিল বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীলতা ও গুণগত মান বৃদ্ধি, চা শিল্পের উন্নয়ন ও উৎকর্ষে বিজ্ঞান ভিত্তিক পরামর্শ ও সহায়তা দান এবং গবেষণালব্ধ প্রযুক্তি চা শিল্পে বিস্তার করা।
লক্ষ্য পূরণে কতটা সফল হয়েছে এ প্রতিষ্ঠান? ইতোমধ্যে বর্তমান সরকার এ ইনস্টিটিউটে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সংযোজন করেছে, যার ফলে এর কর্মপরিধিও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো ইমরুল হাসান চৌধুরী। বর্তমানে ৮টি গবেষণা বিভাগের মাধ্যমে এ প্রতিষ্ঠানটি তার গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনে চায়ে কীটনাশক কী পরিমাণ ব্যবহূত হয়েছে এ সম্পর্কে গবেষণা করে থাকে ইনস্টিটিউটের পতঙ্গবিজ্ঞান বিভাগ। ২০০৯ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এ ল্যাবরেটরিকে রিং টেস্টের জন্য বিশ্বের ১১টি ল্যাবের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞান চা শিল্পে বিস্তার ও বাস্তবায়নে চা শিল্পের অগ্রগতি ও উন্নয়নে প্রবহমান অবদান রাখতে সক্ষম হওয়ায় এ ইনষ্টিটিউট ১২টি জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবেও পরিগণিত। নার্সারিতে কৃমিপোকা একটি প্রধান সমস্যা।
বর্তমান সরকারের সহযোগিতায় ইতোমধ্যে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ যেসব বিভাগ একসময় বন্ধ ছিল, তার কার্যক্রমও এখন সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।