বরগুনায় এক বৃদ্ধ দম্পতির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে বরগুনা সদর উপজেলার নলী গ্রামের নিজ বাড়ির বারান্দা থেকে আবদুল মান্নান (৭৫) ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমের (৬০) লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই দম্পতির ছেলে ও তার স্ত্রীকে আটক করছে পুলিশ।
বৃদ্ধ দম্পতির স্বজনদের বরাত দিয়ে বরগুনা সদর থানার ওসি আবীর মোহাম্মদ হোসেন বলেন, রাতে খাবার খেয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন বৃদ্ধ দম্পতি। পরে সকাল হলেও তাদের ঘুম না ভাঙলে স্বজনরা ঘরের ভেতর ঢুকে তাদের মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এরপর তারা বরগুনা থানায় খবর দিলে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
ওসি বলেন, আবদুল মন্নান দীর্ঘদিন ধরে প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়ে ছিলেন। ছেলেরা অনেক আগেই বাবার সম্পত্তি লিখে নিলেও বাবা-মাকে ভরণ-পোষণ দিতেন না। তাদের খোঁজখবর নিতেন না। একপর্যায়ে মায়ের নামে থাকা ৪৪ শতাংশ জমিও লিখে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। জমি লিখে না দেওয়ায় বড় ছেলে নজরুল ইসলাম ননী ও তার স্ত্রী বীথি একাধিকবার বৃদ্ধ বাবা-মাকে মারধর করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসী এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ করেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির বারান্দায় একসঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন মন্নান ও ফাতেমা। পাশের ঘরে ছিলেন তার বড় ছেলে নজরুলসহ পরিবারের সদস্যরা। ছোট ছেলে জহিরুল ইসলাম রনি বরগুনা শহরে থাকেন। ধারণা করা হচ্ছে গভীর রাতে তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তবে বৃদ্ধ ওই দম্পতির মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো আঘাতের চিহ্ন বা অস্বাভাবিক কোনো কিছু পাওয়া যায়নি জানিয়ে ওসি আবীর বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারিক গোরস্তানে লাশের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে নজরুল-বীথি দম্পতির বড় ছেলে নয়ন পলাতক রয়েছে। তাকেও আটকের চেষ্টা চলছে। ধারণা করছি, অল্প সময়ের মধ্যেই খুনি শনাক্ত হবে।