বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের পায়রা নদীর প্রতিনিয়ত ভাঙনের ফলে পূর্ব পুরুষের রেখে যাওয়া জমিজমা, বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নাম মাত্র বেড়িবাঁধ দেওয়ায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম ও জলোচ্ছ্বাসের কারনে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়। এ নিয়ে আতংকে ভুগছেন ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তালতলীর নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের তেতুলবাড়িয়া ও জয়ালভাংগা এলাকার পায়রা নদীর প্রবলস্রোতে ভয়াবহ ভাঙনে এ এলাকার প্রায় শতধিক বাড়িঘর, জমিজমা, মসজিদ কবরস্থান গাছাপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আতংকে রয়েছে আশপাশের আরও কয়েকটি গ্রামের লোকজন। ভয়াবহ নদী ভাঙনে নিঃস্ব-সর্বস্বান্ত অসহায় মানুষদের বুকফাটা কান্না দেখার এ যেন কেউ নেই ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন। এ এলাকার নয় কিলোমিটার বাঁধের কিছু অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানিউন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। ভাঙন আতংকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে অনেকেই। পায়রার আকস্মিক ভাঙনে সহায় সম্বল আর মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয় টুকু হারিয়ে অসহায় মানুষগুলো আশ্রয় নিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের খোলা আকাশের নিচে। এ যেনো এক অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। এমন তীব্রভাঙন এর আগে তারা কখনো দেখেনি।
স্থানীয় সমাজ সেবক ও সাবেক মেম্বর সেলিম মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাবে স্থায়ী বেড়িবাঁধ না হওয়ায় বারবার নদীভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে পড়ছি আমরা। স্থায়ী বেড়িবাঁধ হলে আমাদের বাপ দাদার জমিজমা রক্ষা পেত। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বাড়িঘর, মসজিদ, আসবাবপত্র, ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম জানান, তেঁতুলবাড়িয়ায় কিছুদিন আগের জলোচ্ছ্বাসে নয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেগুলো মেরামত করা হবে। সিডরের পর কত বার মেরামত করা হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, কাগজপত্র দেখে বলতে হবে তবে তিন চারবার মনে হয় মেরামত করা হয়েছে।
বেড়িবাঁধ সংলগ্ন মাটি কাটায় বাঁধ কতটুকু টেকসই হবে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, দূর থেকে মাটি কেটে আনার বরাদ্দ না থাকায় বেড়িবাধেঁর পাশ থেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি থেকেই মাটি কাটতে হয়। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ হবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানান, স্থায়ী বেড়িবাঁধ প্রকল্প আমাদের প্রক্রিয়াধীন আছে।