বগুড়ায় পানি বন্দি চরাঞ্চলের মানুষ

বগুড়ায় ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরের গ্রামগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত। আজ সকালে ছবিটি তোলা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

বগুড়ায় পানি বন্দি চরাঞ্চলের মানুষ

যমুনার পানি বিপদসীমার ১৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত

  • বগুড়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৩ জুলাই, ২০১৯

বগুড়ায় যমুনা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৪ ঘন্টায় ৫১ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যার পানিতে সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের যমুনা নদীর চরাঞ্চল ও যমুনা তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে যমুনার চরাঞ্চলের মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্রেজ রিডার আব্দুল হামিদ জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় যমুনা নদীর পানি বিপদ সীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীতে ৫১ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা যায়, ধুনট উপজেলায় পানি বন্দি হয়ে পড়েছে যমুনা নদীর বৈশাখী, রাধানগর ও বথুয়ারভিটা চরের প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। এছাড়া বাঁধের অভ্যন্তরের সহরাবাড়ী ও শিমুলবাড়ী গ্রাম সম্পূর্ণ এবং আটাচর, বানিয়াজান, কৈয়াগাড়ী, রঘুনাথপুর, ভান্ডারবাড়ী, পুকুরিয়া, ভূতবাড়ী ও মাধবডাঙ্গা গ্রামের আংশিক এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার পানিতে ইতিমধ্যে ১৪০ হেক্টর জমির পাট, ২ হেক্টর জমির আখ ও ১ হেক্টর জমির মরিচ ক্ষেত বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এরমধ্যে ১৫ হেক্টর জমির পাট ও ১ হেক্টর জমির মরিচ সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। কর্তৃন উপযোগী ফসল কেটে নেওয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে কৃষক পাট কাটা শুরু করেছেন। এদিকে শিমুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করায় পাঠদানের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে আরো কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ধুনট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া সুলতানা বলেন, শনিবার দুপুর পর্যন্ত ধুনট উপজেলায় যমুনার চরাঞ্চলের মানুষগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া নদী তীরের গ্রাম গুলো বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।
অন্যদিকে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা, কর্ণিবাড়ী, বোহাইল, চালুয়াবাড়ী, চন্দনবাইশা, হাটশেরপুর, কুতুবপুর, সারিয়াকান্দি সদর, কামালপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও যমুনার তীরবর্তী এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি মাদ্রাসা, ১টি হাইস্কুলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যায় চরাঞ্চলের কৃষকের আউশ, পাট, রোপা-আমন, বীজতলা, শাকসবজি তলিয়ে গেছে।
চালুয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী জানান, বন্যার পানিতে চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের সুজানের পাড়ায় ২৫টি পরিবার, উত্তর হাটবাড়ী ২০টি, বহুলাডাঙ্গা ২০টি, উত্তর শিমুল তাইড় ৩০টি, ভাঙ্গরগাছা ১৫টি, বিরামের পাঁচগাছী গ্রামে ৩০টি পরিবারসহ মোট ১৪০টি পরিবারের ঘরবাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সিদ্ধার্থ ভৌমিক জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য কন্টোল রুম খোলা হয়েছে। বন্যায় আক্রান্ত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সড়িয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার, চাল-ডাল বিতরণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads