বগুড়ার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। যুমনার পানি বেড়েই চলছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে যমুনার পানি সারিয়াকান্দি পয়েন্টে ১২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে পরিস্থিতি শঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। একই সঙ্গে বাঙালী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমানবতি হচ্ছে এবং প্রতিদিন নতুন এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করছে। যমুনা তীরবর্তী বন্যাকবলিত বগুড়ার তিন উপজেলা- সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনটে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিয়ে পানি চুইয়ে পড়া অব্যাহত রয়েছে। যুমনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাঁধ হুমকির মুখে পড়তে পারে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর শঙ্কাও বাড়ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বাঁধ নিয়ে তাদের শঙ্কা নেই। বৃহস্পতিবার চুইয়ে পড়া পানি সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করেছে।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে সারিয়াকান্দি এলাকার চর এলাকার মানুষেরা। বেশির ভাগ চরের বাড়ি ঘরই পানিতেই ডুবে গেছে। বন্যাকবলিত এলাকালোতে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সুত্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত বন্যা কবলিত তিনটি উপজেলায় ১২৯টি গ্রামে পানি প্রবেশ করায় প্রায় সোয়া লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট ৬৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। বন্যাকবলিত তিন উপজেলার মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলায় সবচেয়ে বেশি এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে।
চর এলাকায় বন্যার্তরা যারা বাড়ি ঘর ছেড়ে চরের আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছিলো সেখানেও দুর্ভোগ তাদের পিছু ছাড়েনি। কিছু আশ্রয় কেন্দ্রে পানি প্রবেশ করতে শুরু করায় লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য অন্যত্র ছুটছে। চরবেষ্টিত ইউনিয়ন কাজলার পাখিমারা চরের কুড়িপাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল প্রায় দেড় হাজার বন্যার্ত। বুধবার রাতে ওই আশ্রয় কেন্দ্রে পানি প্রবেশ শুরু করায় সেখানে আশ্রয় নেওয়া লোকজন বৃহস্পতিবার ছুটছেন অন্যত্র।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহামুদ জানিয়েছেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিয়ে অনেক পয়েন্টে পানি চুইয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেও দ্রুত তা মেরামত করা হচ্ছে এবং এ নিয়ে তারা চিন্তিত নন। উজানে পানি কমতে শুরু করায় যমুনার পানি বৃদ্ধি দ্রুতই থেমে যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।