ঈমানের অন্যতম অঙ্গ ফেরেশতাদের ওপর বিশ্বাস। ফেরেশতার প্রতি ঈমানের অর্থ হলো- ফেরেশতা আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি। তারা নূরের তৈরি। সর্বদা আল্লাহ মহানের হুকুম পালন ও তার ইবাদতে ব্যস্ত থাকেন— দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস পোষণ করা। পাশাপাশি ফেরেশতা নেই, এমন কোনো ধারণা লালন করা থেকে বিরত থাকা। কারণ ফেরেশতাদের অস্তিত্ব কোরআন-হাদিসের অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত। কোনো মুসলমানের এ ব্যাপারে সন্দেহ পোষণের কোনো অবকাশ নেই। ফেরেশতাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করা মানে কোরআন-হাদিসকে অস্বীকার করা— যা কুফরি। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, কিতাবসমূহ, রসুলগণ এবং শেষ দিনকে অস্বীকার করবে, সে ঘোর বিভ্রান্তিতে বিভ্রান্ত (সুরা নিসা, আয়াত-১৩৬)।
কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায় ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব বিষয়াবলি পাওয়া যায়, সেগুলো গবেষণা করলে ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনা কথাটির মধ্যে মোট চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রথমত, ফেরেশতাদের অস্তিত্বকে স্বীকার করতে হবে এবং বিশ্বাস রাখতে হবে। সুরা আম্বিয়ার ২৬ ও ২৭নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, তারা আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোনো কথা বলেন না, তাঁর নির্দেশেই সব কাজ করেন। সুরা তাহরিমের ৬নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, তারা আল্লাহতায়ালার অমান্য করেন না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করেন। এ ছাড়া সুরা আম্বিয়ার ২০নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, তারা অহঙ্কারবশতও তাঁর (আল্লাহ) ইবাদত হতে বিমুখ হন না এবং ক্লান্তিও বোধ করেন না। তারা দিন-রাত তাঁর (আল্লাহ) তাসবিহ পাঠ করেন এবং এতে কোনো শিথিলতা তারা দেখান না। আয়াতে উল্লিখিত ফেরেশতাদের বিষয়াবলিকে বিশ্বাস করতে হবে। দ্বিতীয়ত, নাম জানা বা না-জানা সব ফেরেশতার প্রতি ঈমান আনা। তৃতীয়ত, ফেরেশতাদের যেসব গুণ-ক্ষমতা-বৈশিষ্ট্য ও আকার-আকৃতির কথা জানা যায় সেগুলোর প্রতি ঈমান আনা। কোরআন-হাদিসে যেভাবে যতটুকু গুণ-ক্ষমতা-বৈশিষ্ট্য ও আকার-আকৃতির কথা উল্লেখ রয়েছে সেটুকু বিশ্বাস করা। বাড়তি কোনো কিছু কল্পনা ও প্রচার না করা। চতুর্থত, ফেরেশতাদের যেসব দায়িত্বের কথা জানা যায় সেগুলোর প্রতি ঈমান আনা। আর যেসব দায়িত্বের কথা জানা যায় না সেগুলোর প্রতিও বিশ্বাস রাখা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টির প্রতি ঈমান আনা বা বিশ্বাস রাখা জরুরি, সেটা হলো প্রত্যেক ব্যক্তির সঙ্গে দুজন ফেরেশতা থাকেন। এদের কাজ হলো ব্যক্তির আমলসমূহ লিপিবদ্ধ করা।
লেখক : আলেম ও সাংবাদিক