যদি প্রশ্ন করা হয় বিশ্বের জনপ্রিয় খেলার নাম কি? সবার আগেই যে উত্তর আসবে সেটি ফুটবলের নাম। রাশিয়ায় চলছে ফুটবল বিশ্বকাপের ২০তম আসর। এ নিয়ে আমাদের দেশেও উন্মাদনার শেষ নেই। প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে এই খেলার জনপ্রিয়তা। এটি বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলা। আমাদের দেশের ফুটবল খেলা ক্রিকেটের মতো অবস্থায় আসতে পারেনি। তবে এক সময় বাংলাদেশের ফুটবলেরও ছিল সোনালি অতীত। আমাদের ছিল কাজী সালাউদ্দিন, সাব্বির, মোনেম মুন্না, কায়সার হামিদ প্রমুখের মুখগুলো। তবে বর্তমানে আশার আলো ছড়াচ্ছে কিশোর ফুটবল দল ও নারী দল।
বিশ্বজুড়ে ফুটবল খেলোয়াড়দের অনেক সংস্থা রয়েছে। এসব সংস্থাই মূলত ফুটবলারদের সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা ও দেখাশোনা করে থাকে। অনেক ফুটবলারই বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন নামি-দামি ক্লাবে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে খেলেন ও প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন। ধারণা করা হয় যে, বিশ্বে আনুমানিক ২৫০ মিলিয়ন ফুটবল খেলোয়াড় রয়েছেন। তাদের অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ফুটবলের সঙ্গে জড়িত আছেন। অনেকেই ফুটবলকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন।
ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু গড়তে চাইলে ছোট থেকেই স্থানীয় কোনো দলে নিজেকে যুক্ত করতে হবে। ছোট থেকেই বয়সভিত্তিক দলে খেলতে হবে। যখন তারা নিজেদের মেধা, দক্ষতা প্রদর্শন করে তখন বিভিন্ন ফুটবল ক্লাব তাদের নিজেদের দলে চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। নিজস্ব দক্ষতা, অনন্য প্রতিভাগুণে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ আকর্ষণপূর্বক অন্যত্র খেলার প্রস্তাবনা পান ও চুক্তিতে আবদ্ধ হন। একবার চুক্তিতে স্বাক্ষর করা হয়ে গেলে তারা আরো নিখুঁত সুন্দর খেলা উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে আরো উন্নততর ফুটবলের কৌশল শিখতে থাকেন। সেরা খেলোয়াড়রা এক সময় উচ্চ পর্যায়ের দলে পেশাদারি খেলোয়াড় হিসেবে খেলে আয়-রোজগার করেন। এভাবে পর্যায়ক্রমে জাতীয় দলে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ পায়।
প্রস্তুতি : নিজেকে ফুটবলার হিসেবে তৈরি করতে প্রস্তুতিটা খুব জরুরি। এই জন্য চাই কঠোর পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস। এজন্য আপনাকে নিয়মিত ফুটবল খেলে যেতে হবে এবং পৃথিবীর নামি-দামি খেলোয়াড়দের বিভিন্ন আক্রমণাত্মক শুট এবং তাদের খেলার কলাকৌশল ফলো করতে পারেন। যারা পেশাদার ফুটবলের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে চান, তাদের প্র্যাকটিসের বিকল্প নেই।
প্রশিক্ষণ এবং ক্যাম্প : ঢাকার অদূরে সাভারে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র ক্রীড়া শিক্ষাকেন্দ্র; যা বাংলাদেশ ক্রীড়া সংস্থা (বিকেএসপি) নামে পরিচিত। সেখানে ফুটবলসহ ১৭টি ক্রীড়া বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। তবে সাভারের প্রধান কেন্দ্র ছাড়াও চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও দিনাজপুরে এ সংস্থাটির আঞ্চলিক কেন্দ্র রয়েছে। বিকেএসপি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৬ সালে।
বিকেএসপির মূল শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত। তবে স্নাতক (পাস) ও বিভিন্ন বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রিতেও কিছু শিক্ষার্থীর ভর্তি করানো হয়। বিকেএসপিতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় সপ্তম শ্রেণিতে। তবে বিশেষ ক্রীড়া যোগ্যতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে বয়স ও উচ্চতা শিথিল করা হয়। বিকেএসপির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হলো দেশজুড়ে প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম পরিচালনা। এ লক্ষ্যে ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে বিকেএসপি। এর মাধ্যমে সারা দেশ থেকে খুঁজে বের করা হয় সেরা খেলোয়াড়দের।
এসব খেলোয়াড়কে আবার বিভিন্ন মেয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে তাদের বিকেএসপিতে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) বিভিন্ন সময় ফুটবল প্রশিক্ষণ, ক্যাম্প এবং ট্যালেন্ট হান্টের আয়োজন করে থাকে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় ক্লাব এবং ব্যক্তি উদ্যোগে ফুটবল প্রশিক্ষণ, ক্যাম্প এবং প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা রয়েছে।