সারা দেশ

ফটিকছড়ির জাফতনগরে জোড়া খুন!

  • ''
  • প্রকাশিত ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:

ফটিকছড়ি উপজেলার জাফত নগর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ছমদ বাড়ির এক দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা চার ভাই। বিগত কয়েক বছর পূর্বে জীবিকার তাগিদে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমান সকলে। পরে তিন ভাই বিয়ে করে সংসারী হলেও এক ভাই এখনো অবিবাহিত। এর মধ্যে সবার বড় করিম বছর দুয়েক পূর্বে নিজেদের পৌত্রিক ভিটায় একক ভাবে একটি দালান তৈরী করে করে।

মুলত পরিবারটিতে বিরোধের সুত্রপাত বড় ভাইয়ের আলাদা দালান তৈরী ঘিরে। এভাবে কিছুদিন না যেতেই বড় ভাই করিমের বউ ফারজানাকে নিয়ে পরকিয়ার সন্দেহ করতে থাকেন স্বামী। তবে এটিকে দেবরদের কুটচাল বলছেন ভাবী ফারজানা। এক পর্যায়ে বউকে তালাক দেয়ার সীদ্ধান্ত নেন স্বামী করিম। পরবর্তীতে এ নিয়ে কয়েক দফা সামাজিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সম্পূর্ণ দেন মোহর দিয়ে বউকে বিদায় করার সীদ্ধান্ত হলেও তা মানতে নারাজ করিম। এমতাবস্থায় করিম প্রবাস ফিরে গেলেও স্ত্রী ফারজানা স্বামীর ঘরে থেকে যান। এর মাঝে করিম দেশে ফিরে আসলেও উঠেন বোনের বাড়িতে।

বিগত এক মাসের ব্যাবধানে চার ভাই দেশে আসেন। ৩ সেপ্টেম্বর বিকালে ফারজানা ও তার বড় মেয়ে নিজেদের কক্ষে শুয়ে ছিলেন। এমন সময় করিম ও তার অন্য তিন ভাই মিলে ফারজানার কক্ষে প্রবেশ করে তাকে খুঁজতে থাকে। এ সময় ফারজানা কৌশলে পালিয়ে গিয়ে চিৎকার করতে থাকে।

চিৎকার শুনে পাড়া প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে চার ভাইকে প্রতিরোধ করতে গেলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তেড়ে আসে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি পরে মারামারি লেগে যায়। যা এক সময় কোপাকুপিতে রুপ নেয়।

এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন আহত হলেও দুই সহোদর জাহাঙ্গীর ও আলমগীর ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায়।

পরে বড় ভাই করিম ও ছোট ভাই রাসেল নজেদের শয়ন কক্ষে অবস্থান নিয়ে ভিতর থেকে তালা দিয়ে বসে থাকে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন এসে তাদের বের করে আনে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দীন বলেন, ঘটনার পর রাত ১১ টার দিকে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ময়না তদন্ত শেষে পরদিন আছরের নামাজের পর স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত বোরহানের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।

এলাকাবাসীর জানান, ঘরের বড় বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনা নিয়ে ঘটনার মূল সূত্রপাত। তাদের এই পারিবারিক দ্বন্দ্ব নিরেশনে চেয়ারম্যান মেম্বারসহ সামাজিকভাবে কয়েকবার বৈঠক হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল স্বামী করিম স্ত্রী ফারজানার বিরোধ। এ বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকান্ড ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তারা।

এদিকে নিহত জাহাঙ্গীর ও আলমগীরের মা এবং বোন ও ফুটাতো ভাই বলছেন, তাদের প্রবাসী ভাইদের এলাকাবাসী পরিকল্পিতভাবে মেরেছে এটার বিচার সঠিক দাবি করেন তারা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads