পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডিসেম্বরে উৎপাদনের সম্ভাবনা

পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রে আজ দুপুরে ভীড়ে কয়লাবাহী জাহাজ এম ভি জিন হাই টং-8। এ সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

ভিড়লো কয়লাবাহী জাহাজ

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডিসেম্বরে উৎপাদনের সম্ভাবনা

  • কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে নির্মাণাধীণ পায়রা কয়লা ভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন কাজে ব্যবহারের জন্য কয়লাবাহী প্রথম জাহাজ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভিড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার বালিকপানান বন্দর থেকে ছেড়ে আসা এম ভি জিন হাই টং-৮ নামের হংকংয়ের পতাকাবাহী এ জাহাজ প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভিড়ে। জাহাজটির আগমনকে কেন্দ্র করে জেটি এলাকায় এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এসময় পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সফলতা কামনা করে বিশেষ দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জামে মসজিদের পেশ ইমাম মো. সোলায়মান হোসেন দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর (বিসিপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম, প্রকল্প পরিচালক শাহ্ আবদুল মওলা, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, চীফ হাইড্রোগ্রাফার লে. কমান্ডার মো. সাইফুল ইসলাম, বিসিপিসিএলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক চি ইউসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

পায়রা বন্দরের একটি সূত্র জানায়, প্রথম কয়লাবাহি জাহাজটি ফেয়ার ওয়ে বয়া অতিক্রম করে রাবনাবাদ চ্যানেলে সকাল নয়টায় প্রবেশ করে। এরপর জাহাজটির শুল্কায়নসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া পায়রা বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন করে দুপুর দেড়টার সময় জাহাজটি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভিড়ে।

জার্মানীর ওল্ডেন ড্রাফট কেরিয়ার্স লিমিটেডের মাধ্যমে বাংলাদেশের বেনকন সেটারনস লিমিটেড পোর্ট এজেন্ট হিসেবে এ কয়লা আমদানী করেছে। দেশীয় এ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এ মালেক বলেন, আমরাই পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সব সময় কয়লা আমদানি করবো। দেশের অগ্রগতির সাথে অংশীদার থাকতে পেরে আমরা গর্বিত।

বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর (বিসিপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সুষম উন্নয়নের ফসল হলো পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কয়লা আনার মধ্য দিয়ে নতুন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু করা যাবে। আমরা ডিসেম্বরের প্রথম দিকে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বানিজ্যিকভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে পারবো।’ তিনি আরও বলেন, কনভেয়ার বেল্টের ওপরে ঢাকনা দেয়া আছে। তাছাড়া যেখানে কয়লা রাখা হবে, সেখানেও ঢেকে রাখা হবে। ফলে কয়লার কারণে বায়ু-পরিবেশ ক্ষতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ডক মাষ্টার এস এম শরিফুর রহমান কর্তৃক দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী (বিসিপিসিএল) বছরে প্রায় ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা আমদানী করবে।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সাইদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যতদুর জানি বিসিপিসিএল জেটিতে অক্টোবর মাসে ৪টি জাহাজ আসবে। ডিসেম্বর মাসে ৮টি জাহাজ আসবে। মাসে সর্বোচ্চ ২০-২২টি জাহাজ আনতে পারবো। ক্রমান্বয়ে জাহাজের সঙ্গে বাড়তে থাকবে। এর মাধ্যমে আমরা বলতে পারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের পায়রা বন্দরের বাস্তবায়ন শুরু হলো।

তিনি আরো বলেন, ২০১৬ সালের ১৩ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা বন্দরের মুরিং পয়েন্টে শীপ টু শীপ লাইটারেজের মাধ্যমে আংশিক অপারেশনাল কার্যμমের শুভ উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩৪ টি বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের অপারেশনাল কার্যক্রম পায়রা বন্দরের মাধ্যমে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads